নির্বাসনের অবসান, নতুন অধ্যায়ের সূচনা

দীর্ঘ সময়ের প্রতীক্ষা, অনিশ্চয়তা ও আবেগের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে স্বদেশে ফিরলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে তাকে বহন করা বিমান ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তার এ আগমন দেশের রাজনীতিতে সৃষ্টি করেছে নতুন আলোড়ন, আর বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে জাগিয়েছে গভীর আবেগ ও প্রত্যাশা। দীর্ঘদিন দেশের বাইরে অবস্থানের পর তারেক রহমানের এ প্রত্যাবর্তনকে বিএনপি নেতাকর্মীরা দেখছেন এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে। অনেকে মনে করছেন, এটি শুধু একজন রাজনৈতিক নেতার দেশে ফেরা নয়, বরং একটি দলের জন্য নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর উপলক্ষ। তার অনুপস্থিতিতে দল যেসব চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে গেছে, সেই প্রেক্ষাপটে এই প্রত্যাবর্তনের গুরুত্ব আরও গভীরভাবে অনুভূত হচ্ছে। দলীয় সূত্র জানায়, তারেক রহমানের আগমন ঘিরে আগেই সর্বোচ্চ সতর্কতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী বিমানবন্দর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। একই সঙ্গে বিএনপির পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদের বিমানবন্দরে ভিড় না করার আহ্বান জানানো হয়, যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়। আরও পড়ুন১৭ বছরের নির্বাসন শেষে দেশে প্রত্যাবর্তনতারেক রহমানের অপেক্ষায় গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়ি তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে বিএনপির তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যেও দেখা গেছে আবেগঘন প্রতিক্রিয়া। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুভূতি প্রকাশ করে একে ‘আশার প্রত্যাবর্তন’ বলে উল্লেখ করেছেন। দীর্ঘ সময় ধরে ভার্চুয়ালি নেতৃত্ব দেওয়া এই নেতা এবার সরাসরি মাঠের রাজনীতিতে কীভাবে সক্রিয় হন, সেদিকেই তাকিয়ে আছে দলের নেতাকর্মীরা। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। তার উপস্থিতি বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি পুনর্গঠন ও রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। একই সঙ্গে দেশের রাজনীতিতেও নতুন সমীকরণ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন অনেকে। তারেক রহমানের আগমনের পর তার পরবর্তী কর্মসূচি, রাজনৈতিক অবস্থান ও বক্তব্য নিয়ে কৌতূহল বাড়ছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। শিগগির এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য ও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। আরও পড়ুনদেশের আকাশসীমায় ঢুকে যে অনুভূতি প্রকাশ করলেন তারেক রহমানঅবশেষে ঢাকায় তারেক রহমান দলের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছে, বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে তারেক রহমান যাবেন ৩০০ ফিট এলাকার সংবর্ধনাস্থলে। সেখানে অপেক্ষায় থাকা নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দেবেন তিনি। কী থাকবে সেই ভাষণে, এখন সেদিকেই দৃষ্টি সবার। দীর্ঘ অপেক্ষার পর প্রিয় নেতাকে মাতৃভূমিতে ফিরে পাওয়ার খবরে বিএনপির নেতাকর্মীদের চোখে-মুখে যে আবেগ ও প্রত্যাশার ছাপ—তা স্পষ্টভাবেই জানান দিচ্ছে, এ প্রত্যাবর্তন শুধু ফিরে আসা নয়, বরং একটি নতুন অধ্যায়েরও সূচনা। এমএএস/এমকেআর/এমএস