সুস্বাদু ডালের বড়া তৈরিতে ব্যস্ত গাইবান্ধার কারিগররা

গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের খামার বোয়ালী গ্রাম। মাসকলাইয়ের ডাল গুঁড়ো করে সুস্বাদু বড়া তৈরির জন্য গ্রামটি এখন ‘বড়ার গ্রাম’ হিসেবেই সবার কাছে পরিচিত। বছরের অন্যান্য সময়ে বড়া তৈরি হলেও মূলত শীতকালে জমে ওঠে বড়ার ব্যবসা। তাই কারিগরদের এখন দম ফেলার সুযোগ নেই।সরেজমিনে দেখা যায়, কাকডাকা ভোর থেকে পুরো গ্রামজুড়ে চলে পরিবারের সবার কর্মব্যস্ততা। কেউ ডাল ও চাল ধোয়া নিয়ে ব্যস্ত, কেউ মেশিনে ভাঙানো, কেউ বড়া তৈরিতে আবার কেউবা ব্যস্ত শুকানোর কাজে। শীত এলেই চাহিদা বেড়ে যায় ডালের তৈরি এই বড়া বা বড়ির। শীতকালীন নানারকম তরিতরকারি ও সবজির সঙ্গে অত্যন্ত সুস্বাদু এই ডালের বড়া তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাইবান্ধার কারিগররা। বড়ার কারিগর রঞ্জনা রানী জানান, মাসকলাইয়ের খোসা ছাড়ানো ডালের সঙ্গে সামান্য পরিমাণ আতপ চাল মিশিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে পরিমাণমতো মশলা দিয়ে মেশিনে গুঁড়ো করা হয়। এরপর চাল ও ডালের গুঁড়ো একসঙ্গে গুলিয়ে জালের তৈরি মাচায় ৩ থেকে ৪ দিন রোদে শুকানো হয়। শক্ত হয়ে গেলে তৈরি হয় সুস্বাদু বড়া। এরপর সামান্য তেলে ভেজে বিভিন্ন তরকারির মধ্যে খাওয়া যায় এ বড়া। মাঝে মাঝে রোদে শুকিয়ে বড়া দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। শীতের বিভিন্ন সবজির সঙ্গে জনপ্রিয় ও সুস্বাদু হাতে তৈরি এ বড়া স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। ডালসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভ কিছুটা কম হলেও বংশপরম্পরায় চলে আসা এ পেশা ধরে রেখেছেন তারা। প্রচুর চাহিদা থাকায় এখন পাটায় গুঁড়ো করার পরিবর্তে আধুনিক মেশিনে তৈরি হচ্ছে এই শীতকালীন বড়া। দেশের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি দেশের বাইরেও যাচ্ছে এসব বড়া। আরও পড়ুন: কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় জবুথবু গাইবান্ধার চরাঞ্চলের মানুষ বড়া তৈরির কারিগর রতন চন্দ্র বলেন, ‘বংশপরম্পরায় বছরের পর বছর আমরা এ পেশা ধরে রেখেছি। সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পেলেও অল্প লাভে আমরা দেশের বিভিন্ন স্থানে এ সুস্বাদু বড়া সরবরাহ করে আসছি।’ গাইবান্ধা বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ আল ফেরদৌস বলেন, ‘এখানকার বড়া খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কারিগরি ও ঋণ সহযোগিতা দিয়ে আদি এ পেশা ধরে রাখতে সহযোগিতা করা হচ্ছে।’ উল্লেখ্য, বোয়ালী ইউনিয়নের খামার বোয়ালী গ্রামের অর্ধশতাধিক পরিবার এ ডালের বড়া তৈরির সঙ্গে জড়িত।