অনলাইনে টিকিট বিক্রি বা এজেন্ট নিয়োগের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে কেবি এভিয়েশন ও প্রাইম ওয়ান এভিয়েশনের মালিক আবু বক্করের বিরুদ্ধে। এ ফাঁদে পড়ে বহু মানুষ নিঃস্ব হয়েছেন। কোরিয়ায় আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। দেশে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে চলমান মামলা বর্তমানে সিআইডি তদন্ত করছে।ঢাকা-সিউল রুটে সিঙ্গেল বা আপ-ডাউন বিমান টিকিটে মূল্যছাড় দেয়া, অদৃশ্য এজেন্ট নিয়োগসহ নানা ধরনের প্রতারণার খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে বিদেশগামীদের টিকিটের প্রয়োজন হলে মেসেঞ্জার বা হোয়াটসঅ্যাপে ছবি, পাসপোর্ট নেয়াসহ পুরো প্রক্রিয়াই সম্পন্ন করা হয়। তবে এই প্রক্রিয়ার ফাঁদে বহু মানুষ হারিয়েছেন তাদের অর্থ এবং প্রবাসে যাওয়ার স্বপ্ন। বিপরীতে কোটি কোটি টাকা ঠিকই পকেটে ভরেছেন টিকিট বিক্রিকারী প্রতিষ্ঠান কেবি এভিয়েশন ও প্রাইম ওয়ান এভিয়েশনের স্বত্বাধিকারী আবু বক্কর সিদ্দিক। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আবু বক্কর কোরিয়া থাকলেও, দেশে তার স্ত্রী ও সহযোগীরা কখনও টিকিট বিক্রির নামে আবার কখনও এজেন্ট নিয়োগ দেয়ার নামে প্রতারণা করছেন। আবু বক্করের এজেন্সির ঠিকানায় গেলে মেলেনি অফিসের অস্তিত্ব। তবে মিলেছে কোরিয়ান আদালতে তার নামে হওয়া মামলা ও মালয়েশিয়ায় জেলখাটার তথ্য। দেশেও মামলা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে; যা সিআইডি তদন্ত করছে। সিআইডির ইন্সপেক্টর ওয়াজিদ আহমেদ বলেন, ‘বহু মামলা হওয়ার পরও ওই প্রতিষ্ঠান শুধু নাম পরিবর্তন করে চলছে। এখনো বিভিন্ন নামে প্রতারণা চালানো হতে পারে। আরও পড়ুন: বিমানের টিকিট বিক্রিতে ওটিএর অফারের ফাঁদ, ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক ও এজেন্সি! আবু বক্করের মতো গুঁটি কয়েক ব্যক্তির জন্য কোরিয়া-বাংলাদেশ বাণিজ্যিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে দাবি কোরিয়ান বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের। সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ শাহাব উদ্দীন বলেন, কিছু অসাধু ব্যক্তির জন্য কোরিয়ায় বাংলাদেশের ব্যবসায়িক ভাবমূর্তি নেতিবাচক প্রভাবিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে আমাদের স্কিল ওয়ার্কফোর্স নেয়ার পরিকল্পনাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বায়রার নেতারা মনে করেন, এজেন্সির পাশাপাশি অনলাইনে প্রতারণা বন্ধে সরকারের পদক্ষেপ জরুরি। বায়রার সাবেক মহাসচিব আলী হয়দার চৌধুরী বলেন, টিকিট দিচ্ছে, কিন্তু এয়ারপোর্টে যাওয়ার পর ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এই ধরনের প্রতারণা বন্ধে সোশ্যাল কমিউনিকেশন মনিটরিং সেলকে কার্যকর অ্যাকশন নিতে হবে। তবে আবু বক্করের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আবু বক্কর বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে জানি না।’ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশি নাগরিক বাস করছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন।