ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ছাত্রনেতা শরীফ ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন হাজারো শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা।‘সুশীলতার দিন শেষ, খুনিদের বিচার চাই’–এমন বজ্রকণ্ঠে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, যতক্ষণ সরকারের উপদেষ্টারা সশরীরে এসে খুনিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না দেবেন, ততক্ষণ তারা রাজপথ ছাড়বেন না।শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জুমার নামাজ শেষে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। ইনকিলাব মঞ্চের নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান নেন। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা এই বিক্ষোভে যোগ দিলে শাহবাগ এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়ে চারপাশের সড়কগুলো।অবরোধ কর্মসূচি থেকে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘আমরা অনেক ধৈর্য ধরেছি, সুশীলতা অনেক হয়েছে। কিন্তু এই সুশীলতার সুযোগ নিয়ে আমাদের ভাই ওসমান হাদির রক্ত ঝরানো হয়েছে। আমাদের আর পেছনে ফেরার পথ নেই। এই রাজপথ এখন শহীদের রক্তের বদলা নেয়ার জায়গা।’ আরও পড়ুন: হাদি হত্যা: ফয়সালকে পালাতে সহায়তাকারী রাজু ৫ দিনের রিমান্ডেতিনি বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত সরকারের সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টারা এখানে এসে জনগণের সামনে জবাবদিহি না করবেন এবং খুনিদের গ্রেফতারের ঘোষণা না দেবেন, ততক্ষণ শাহবাগ আমাদের দখলে থাকবে। প্রয়োজনে আমরা আজ এই চত্বরেই রাত্রিযাপন করব।’উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন ওসমান হাদি। সংকটাপন্ন অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে গত ১৫ ডিসেম্বর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর গত ১৮ ডিসেম্বর না ফেরার দেশে চলে যান এই লড়াকু প্রাণ।বিক্ষোভকারীদের দাবি, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। বর্তমান প্রশাসনের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তারা অবিলম্বে দোষীদের চিহ্নিত করে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান। প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত শাহবাগে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।