জলাবদ্ধতায় তলিয়ে থাকে জমি, কৃষকের খোরাকিতে ভাটা

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার গাগরিজোড়া এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে গত চার বছর ধরে প্রায় ৫০০ একর জমিতে মৌসুমী বড় ধানের চাষ বন্ধ রয়েছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন অন্তত ছয় থেকে সাতশ কৃষক পরিবার।স্থানীয়দের অভিযোগ, শরীয়তপুর–ঢাকা সড়কের কোটাপাড়া সেতু নির্মাণের সময় পানি নিষ্কাশনের একমাত্র খাল বন্ধ করে দেয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একসময় গাগরিজোড়া এলাকার বিস্তীর্ণ জমিতে সোনালি ধানের ফলন হতো। প্রতি একর জমিতে ৭০ থেকে ৮০ মণ পর্যন্ত ধান উৎপাদন হতো, যার বাজারমূল্য ছিল ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা প্রতি মণ। বর্তমানে সেই জমিগুলো বছরের অধিকাংশ সময় পানিতে তলিয়ে থাকায় কৃষিকাজ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে জমিগুলো হাওড়ে পরিণত হয়েছে। ধান চাষ বন্ধ থাকায় কৃষকদের আর নিজেদের উৎপাদিত চাল খাওয়ার সুযোগ নেই। বছরের পর বছর বাজার থেকে চাল কিনে পরিবার চালাতে হচ্ছে তাদের। এতে একদিকে আর্থিক সংকট, অন্যদিকে চরম খাদ্য অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারগুলো। আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে ছাত্রদল-এনসিপির সংঘর্ষ, আহত ১০ ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, গত চার বছর ধরে তারা মৌখিক ও লিখিতভাবে স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকে বিষয়টি জানিয়ে আসছেন। তবে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দিন দিন বাড়ছে। কৃষকদের আশঙ্কা, দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করা হলে ভবিষ্যতে এ অঞ্চলে ধান চাষ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ বিষয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগ এবং কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, তারা সমস্যাটির কথা অবগত রয়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। শরীয়তপুর খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মোঃ রোকনুজ্জামান জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আরও পড়ুন: সিসি ক্যামেরাবিহীন অনিরাপদ শরীয়তপুর শহর অন্যদিকে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাবিল হোসেন বলেন, কোটাপাড়া সেতু এলাকায় পানি নিষ্কাশনের বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্থানীয়দের হিসাব অনুযায়ী, প্রতি বছর ৫০০ একর জমিতে ধান চাষ বন্ধ থাকায় প্রায় ৬ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়া হলে এই ক্ষতি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।