ফলের চড়া দামে অস্বস্তিতে ক্রেতারা

শীতের মৌসুমে কুলসহ বিভিন্ন ফল বাজারে এলেও দাম বেশি হওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন ক্রেতারা। ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি মাঝারি আকারের বরই বিক্রি হচ্ছে ১৫০-২০০ টাকায়, কুল ২৫০-৩০০ টাকায়। ছোট বরই ১০০-১৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া থাই পেয়ার ১০০-১২০ টাকা এবং চালতা ও কদবেল ৪০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই চার ফলের বাইরে বাকি ফলও ক্রেতার নাগালের বাইরে রয়েছে। দাম বেশি হওয়ায় মলিন ক্রেতার মুখ। কিনছেন সীমিত পরিমাণ। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) মিরপুর, টোলারবাগ, পল্লবী, কালশী ও রূপনগর এলাকার বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশি ফলের পাশাপাশি আপেল, আঙুর, কমলা, আনারসহ অধিকাংশ আমদানি করা ফল প্রচুর সরবরাহে রয়েছে। এসব বাজারের ক্রেতারা জানান, পবিত্র রমজান শুরু হতে এখনো প্রায় দুই মাস বাকি থাকলেও রাজধানীর বাজারে আমদানি করা ফলের দাম এরই মধ্যে বেড়েছে। বর্তমানে ৩০০-৩৫০ টাকার নিচে মিলছে না বেশিরভাগ ফল। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি পর্যায়ে দাম বেশি থাকায় খুচরা বাজারেও ফলের দাম চড়া। আমদানি কম হওয়া ও উচ্চ রাজস্বের কারণে বিদেশি ফলের দাম বেড়েছে। এ অবস্থায় রমজান মাসের আগে ফলের দাম আরেক দফা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পল্লবীর ফল বিক্রেতা রায়হান মাহমুদ বলেন, পাইকারি বাজারে সব ধরনের আমদানি করা ফলের দাম বেড়েছে। মাল্টার দাম কিছুটা কম থাকলেও প্রতি সপ্তাহেই ফলের দাম বাড়ছে। রমজানের আগে দাম আরও বাড়তে পারে। কারণ সে সময় চাহিদা বাড়বে, সরবরাহ কম থাকবে। রূপনগর বাজারের ফল বিক্রেতা শামসুদ্দোহা বলেন, ফল বিক্রি আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে। বর্তমানে মূলত অসুস্থ ব্যক্তিরাই ফল কিনছেন। সাধারণ ক্রেতারা নিজের খাওয়ার জন্য খুব অল্প পরিমাণে ফল নিচ্ছেন—আধা কেজি কিংবা এক-দুটি কমলা বা আপেল। এভাবেই এখন বেচাকেনা চলছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ২৫০–৩০০ টাকায়। কমলার দাম ৩৫০–৩৮০ টাকা, ছোট কমলা ৩০০–৩২০ টাকা এবং চায়না কমলা ৩০০–৩২০ টাকা। নাশপাতি বিক্রি হচ্ছে ৩০০–৩৫০ টাকায়। এছাড়া আনারের দাম ৬০০–৬৫০ টাকা, আঙুর ৫০০–৬০০ টাকা এবং পার্সিমন ফলের দাম প্রতি কেজি এক হাজার ২০০ টাকা। ফুজি আপেল ৩০০- ৩৫০ টাকায়, সবুজ আপেল বিক্রি হচ্ছে ৪০০–৪৫০ টাকায়। এছাড়া দেশে উৎপাদিত ফলের মধ্যে প্রতি কেজি ড্রাগন ফলের দাম ২০০–২৫০ টাকা, সফেদা ১৫০ টাকা, আমড়া ১২০–১৫০ টাকা এবং জলপাই ৮০–১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে তদারকির অভাবে ইচ্ছামতো ফলের দাম নির্ধারণ করছেন বিক্রেতারা। মধ্য পল্লবীর ফুটপাতে একাধিক ফলের দোকান ঘুরে দেখছিলেন চাকরিজীবী নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও প্রতি কেজি মাল্টা ও কমলা ছিল ২০০–২৫০ টাকা, কিন্তু এখন সেগুলোর দাম ৩০০ টাকার ওপরে। বাজারে ফলের ঘাটতি নেই, আমদানিও পর্যাপ্ত। তাই ফলের দাম বাড়ার যুক্তিসংগত কোনো কারণ নেই। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে ফল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাবে। গৃহিণী সাবিহা মাহমুদ বলেন, রমজান আসতে দেরি আছে। এর মধ্যে বেড়েছে ফলের দাম। ফলের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের বড় পদক্ষেপ প্রয়োজন। এসএম/এমএএইচ/এএসএম