চট্টগ্রামে বিয়ের আসরে ‘জাস্টিস ফর হাদি’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদী বার্তা দিয়েছেন এক নবদম্পতি। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে পটিয়া উপজেলার একটি কমিউনিটি সেন্টারে নাইখাইন গ্রামের মাসুদুল হক মাসুম ও জিরি গ্রামের সাবিনা আক্তার সুমাইয়ার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। বিয়ের আসরে মালাবদলের সময় বর-কনে ‘জাস্টিস ফর হাদি’ লেখা প্ল্যাকার্ড উঁচিয়ে ধরে শরিফ ওসমান হাদির হত্যার বিচার দাবি করেন। বিয়ের আনন্দঘন মুহূর্তে তাদের এ প্রতিবাদী ও মানবিক অবস্থান পুরো উপজেলাজুড়ে আলোচনা সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নবদম্পতির এ উদ্যোগ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এসময় বর-কনের সঙ্গে অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরাও একাত্মতা প্রকাশ করেন। তারা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস ফর ওসমান হাদি’, ‘জান দেবো, জুলাই দেবো না’, ‘আমি আমাদের শত্রুর সঙ্গে ইনসাফ চাই’, ‘শহিদ ওসমান হাদি হত্যার বিচার চাই’ এবং ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’— এ ধরনের লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিচারের দাবি জানান। এ বিষয়ে বর মাসুদুল হক মাসুম বলেন, ‘বিয়ে জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এ আনন্দঘন মুহূর্ত থেকেই আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে বার্তা দিতে চেয়েছি। হাদির ন্যায়বিচার নিশ্চিত হওয়া জরুরি। কেউ যেন এ দাবি ভুলে না যায়, সেটাই আমাদের উদ্দেশ্য।’ মাসুমের বন্ধু তারেক বলেন, ‘আজকাল মানুষ বিয়েতে শুধু আনন্দে মেতে থাকে। কিন্তু মাসুম ও সুমাইয়া দেখিয়েছেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও ন্যায়বিচারের পক্ষে যে কোনো সময় আওয়াজ তোলা সম্ভব। তাদের সাহসী উদ্যোগ আমাদের সবাইকে ভাবতে বাধ্য করেছে।’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরাও নবদম্পতির এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে দ্রুত হাদির হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি করেন। গত ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের কিছু পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের কালভার্ট রোডে রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। তাকে মাথায় গুলি করার পর মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে ১৮ ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়। গত শনিবার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে তার জানাজা হয়। এরপর তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ-সংলগ্ন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিস্থলের পাশে দাফন করা হয়। এমডিআইএইচ/এমএএইচ/এএসএম