বিপিএলের ১২তম আসরে প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েছে নোয়াখালীর কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি— নোয়াখালী এক্সপ্রেম। উদ্বোধনী দিনের দ্বিতীয় ম্যাচেই তারা মাঠে নামে চট্টগ্রাম রয়্যালসের বিপক্ষে। তবে বিপিএলে নিজেদের অভিষেকটা রাঙাতে পারেনি নোয়াখালী। চট্টগ্রামের করা ১৭৪ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৬৫ রানের বড় ব্যবধানে হেরে বিপিএলে যাত্রা শুরু করে নোয়াখালী এক্সপ্রেস।সবশেষ দল হিসেবে এবারের বিপিএলে যুক্ত হয় নোয়াখালী এক্সপ্রেস। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই দলটা বেশ ভালোভাবেই গুছিয়ে নিয়েছে তারা। মাজ সাদাকাত, হাবিবুর রহমান সোহান, জাকের আলী, অঙ্কন, ইহসানউল্লাহ, হাসান মাহমুদদের নিয়ে বেশ শক্তিশালী স্কোয়াড করেছে নোয়াখালী। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু পায় চট্টগ্রাম। মির্জা তাহির বেগের ৮০ ও শেখ মেহেদীর ২৬ রানের ক্যামিওতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রানের পুঁজি পায় বন্দর নগরীর দলটি। জবাব দিতে নেমে ১৬.৫ ওভারে ১০৯ রানে অলআউট হয়ে যায় নোয়াখালী এক্সপ্রেস। জবাব দিতে নেমে ভালো শুরু পায় নোয়াখালী এক্সপ্রেস। স্কোরবোর্ডে ২৩ রান যোগ হতেই বিদায় নেন হাবিবুর রহমান সোহান। ৭ বলে ১৫ রান করে শরিফুল ইসলামের বলে মাসুদ গুরবাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। সাব্বির হোসেন ও সৈকত আলীও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। পাওয়ারপ্লেতে ৩ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৪২ রান যোগ করে নোয়াখালী এক্সপ্রেস। আরও পড়ুন: দুবাই থেকে আসছে বিপিএলের হীরাখচিত ট্রফি জাকের আলী অনিকও ফিরেছেন দ্রুতই। ১২ বল খেলে মাত্র ৬ রান করে শেখ মেহেদীর বলে মোহাম্মদ নাঈমের হাতে ক্যাচ তুলে দেন এই ব্যাটার। এক প্রান্ত আগলে রেখে একাই লড়াই করেছেন মাজ সাদাকাত। দলীয় ৮৬ রানের মাথায় আবু হায়দারের বলে তানভীর ইসলামের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ব্যাটার। ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২৭ বলে ৩৮ রান। এরপর লড়াই করার চেষ্টা করেন হায়দার আলী। তবে ২৪ বলে ২৮ রান করেই সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। দলীয় ১০০ রানের মাথায় তানভীর ইসলামের বলে মাহমুদুল হাসান জয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ব্যাটার। এরপর ইনিংস বড় করতে পারেননি আর কোনো ব্যাটার। ৯ রানের ব্যবধানেই তারা হারায় ৪ উইকেট। হাসান মাহমুদ ও ইহসানউল্লাহ ফেরেন শূন্য রানেই। মেহেদী হাসান রানা ২ ও জহির খান করেন ১ রান। শেষ পর্যন্ত ১৯ বল বাকি থাকতে ১০৯ রানে অলআউট হয়ে যায় নোয়াখালী এক্সপ্রেস। চট্টগ্রামের হয়ে তানভীর ইসলাম নেন ৩ উইকেট। এছাড়া শরিফুল ইসলাম, মেহেদী হাসান ও মুকিদুল ইসলাম নেন ২টি করে উইকেট। এর আগে ব্যাট করতে নেমে শেষ ওভার পর্যন্ত টিকে থাকলেও ধীরগতিতেই খেলেছেন চট্টগ্রামের মির্জা তাহির বেগ। ওপেনিংয়ে নেমে অর্ধেকের বেশি বল খেলেও সেঞ্চুরি করতে পারেননি। তা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম তুলে ১৭৪। তাদের সংগ্রহটা জেতার মতো হয়েছে অধিনায়ক শেখ মেহেদীর ক্যামিও ইনিংসে। আরও পড়ুন: উদ্বোধনী ম্যাচেই সেঞ্চুরি, সিলেটের দর্শকদের শান্ত করে দিলেন ‘শান্ত’ ইনিংসের শেষ ডেলিভারিতে আউট হওয়া তাহির বল খেলেন ৬৯টি। ৭ চার ও ২ ছক্কায় সাজানো ছিল তার ইনিংসটি। মেহেদী খেলেন ১৩ বলে ২৬ রানের ক্যামিও। শুরুটা ভালো হয়নি এবারের বিপিএল নিলামের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় নাইম শেখের। ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় চট্টগ্রামে যাওয়া এই ক্রিকেটার আউট হন মাত্র ১১ বল খেলে, রানও করেন ১১টি। নোয়াখালী পেসার মেহেদী হাসান রানার ওভারে নাইম ক্যাচ দেন সাব্বির হোসেনকে। নাইম গত আসরের ১৪ ম্যাচে ৫১১ রান করে সর্বোচ্চ সংগ্রাহক হয়েছিলেন চট্টগ্রামের উদ্বোধনী জুটি ভেঙেছিল ২৯ রানের মাথায়। স্কোরবোর্ডে আর ৩৫ রান উঠার পর বিদায় নেন মাহফিজুল ইসলাম। মাজ সাদাকাতের বলে বোল্ড হওয়া এই ব্যাটার ১২ বলে করেন ১৬। ২ উইকেট চলে গেলেও মির্জা তাহির বেগ হাল ধরে রেখেছিলেন ধীরগতির ইনিংসে। ৪৯ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। দলীয় ১২ রানের মাথায় মাহমুদুল হাসান জয়কে তুলে নেন জহির খান। ১২ বলে জয় করেন ১৭। ১৬তম ওভারে মেহেদী হাসানের ২ চার ও এক ছয়ে চট্টগ্রামের রানের গতি বাড়ে। অলরাউন্ডার আউট হন সাব্বির হোসেনের বলে সীমানায় ক্যাচ দিয়ে। তখন ৪ উইকেটে চট্টগ্রামের দলীয় সংগ্রহ ১৬১। পরের ১০ বলে ২ উইকেটের বিনিময়ে তারা করতে পারে আর ১৩ রান।