যাত্রী তুলতে জেটিতে ভেড়ানোর আগমুহূর্তে সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজ ‘দ্যা আটলান্টিক ক্রুজে’ এক কর্মচারী নিহত হয়েছেন। তবে আগুন লাগার পরপরই ওপর তলায় থাকা ক্রুসহ জাহাজের ডজনাধিক কর্মীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। পর্যটকবাহী জাহাজ মালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কক্সবাজারের নুনিয়াছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট সংলগ্ন বাঁকখালী নদীতে অবস্থানরত জাহাজটিতে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করা কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগুনের কবলে পড়ে জাহাজের নিচতলায় থাকা অজ্ঞাতনামা এক কর্মচারী মারা গেছেন। তারা মরদেহ উদ্ধার করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে নাম-ঠিকানা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আগুন এখনো পুরো নিয়ন্ত্রণে না আসায় ভেতরে প্রবেশ করা দুরূহ হচ্ছে। পুরো আগুন নিভে গেলে আরও সবিশেষ নিশ্চিত করা যাবে। স্কোয়াব সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, অগ্নিকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আগুন পুরো নিয়ন্ত্রণে আনতে এখনো সক্ষম হননি ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট। ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। তিনি আরও জানান, কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকদের তুলতে জাহাজটি ভেড়ার ঠিক আগ মুহূর্তে আগুন লেগে যায়। নদীর মোহনায় দাও দাও করে জ্বলতে থাকে জাহাজটি। আগুন দেখে গামবোট ও স্পিডবোটের সাহায্যে স্থানীয়রা জাহাজটির ক্রুসহ ১২-১৪ জন কর্মচারীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসনে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে কক্সবাজার সদরের ইউএনও তানজিলা তাসনিম বলেন, প্রতিদিনের মতো সেন্টমার্টিন যেতে পর্যটক তোলার জন্য সকাল ৬টা ২০ মিনিটের দিকে ঘাটে আসছিল দ্যা আটলান্টিক ক্রুজ জাহাজটি। হঠাৎ জাহাজের ভেতর থেকে ধোঁয়া উঠতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট। কিন্তু ৪ ঘণ্টার চেষ্টায়ও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি তারা। কাজ চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, জাহাজে আগুন লাগার ঘটনায় আতঙ্ক বিরাজ করে সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকদের মাঝে। পুড়ে যাওয়া জাহাজে ২০০ জনের মতো যাত্রী ওঠার কথা ছিল। এদের মাঝে ১২০ জনকে অন্য তিনটি জাহাজে ভাগ করে তুলে দেয়া হয়। আর বাকিরা আগামীকাল (রোববার) সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুটি জাহাজ জেটি ছেড়ে যেতে দেরি করলে ক্ষুব্ধ হন যাত্রীরা। অপরদিকে জাহাজে অনাকাঙ্ক্ষিত আগুন লাগার খবর পেয়ে কক্সবাজার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক এমএ মান্নান। পরিদর্শন শেষে ডিসি বলেন, জাহাজে আগুন লাগার কারণ জানতে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিকেলে (শনিবার) জাহাজ মালিকদের সঙ্গে সভার সিদ্ধান্তও হয়েছে। উল্লেখ্য, কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে প্রতিদিনই ৭টি পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করছিল। এরমাঝে আটলান্টিক ক্রজে আগুন লাগার ঘটনায় একটি জাহাজ বাদে বাকি ছয়টি সেন্টমার্টিন গেলো। সায়ীদ আলমগীর/এফএ/এএসএম