রংপুর চিড়িয়াখানায় বাঘের দুই শাবক দেখতে ভিড়

রংপুর চিড়িয়াখানায় বাঘ দম্পতি রোমিও ও জুলিয়েটের কোলজুড়ে এসেছে দুই সন্তান। তাদের নাম রাখা হয়েছে রাজা ও রানী। তিনমাস আগে এ দম্পতির ঘরে দুই সন্তানের জন্ম হয়। সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে দর্শনার্থীদের জন্য দুই শাবককে উন্মুক্ত করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দুই শাবককে দেখতে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়েছে। কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌর এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম তার পাঁচ বছর বয়সি ছেলে সন্তানকে নিয়ে এসেছেন চিড়িয়াখানায়। তিনি জানান, চিড়িয়াখানায় অন্যান্য পশুপাখির মধ্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বাঘের দুই বাচ্চা। তাদের ছোটাছুটি দেখে দর্শনার্থীসহ ছেলে-মেয়েরাও ভীষণ খুশি। রংপুর নগরীর দর্শনা থেকে ছেলে ও মেয়ে নিয়ে এসেছেন গৃহবধূ জাহানারা বেগম। তিনি জানান, শহরে মাইকিং শুনে দুই সন্তান নিয়ে এসেছেন বাঘের দুই শাবক দেখতে। সবসময় বড় বাঘ দেখলেও এবার প্রথম দুই শাবক দেখতে পরে সন্তানদের সঙ্গে তিনি নিজেও ভীষণ উচ্ছ্বসিত। তবে রংপুর চিড়িয়াখানা থেকে যেন তাদের অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া না হয় সে দাবি জানান জাহানারা। রংপুর চিড়িয়াখানার কেয়ারটেকার সামসুল জানান, জন্মের পর থেকে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দুই শাবককে বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়েছে। জন্মের পর থেকে শাবক দুটি যাতে তাদের মায়ের দুধ পান করে নিরিবিলি থাকতে পারে সেজন্য তাদের মা জুলিয়েটের সঙ্গে আলাদা করে রাখা হয়। বাবা রোমিওকে আলাদাভাবে রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এভাবে নিবিড় পরিচর্যা করে তিন মাস অতিবাহিত হবার পর গত রোববার থেকে শাবক দুটিকে তাদের মায়ের সঙ্গে করে খাঁচার ভেতরে আনা হয়। রংপুর চিড়িয়াখানার ইজারাদার হজরত আলী জানান, শীতকে উপেক্ষা করেও বাঘের বাচ্চা দেখতে দর্শনার্থীরা আসছেন। এখন স্কুল বন্ধ। জানুয়ারির এক তারিখ থেকে স্কুল খুললে দর্শনার্থী আরও বাড়বে বলে আশা করছি। রংপুর চিড়িয়াখানার চিকিৎসক ডা. শাহাদত হোসেন বলেন, রয়েল বেঙ্গল টাইগার দম্পতির আগেও দুবার গর্ভবতী হয়েছিল কিন্তু মিসকারেজ হওয়ায় বাচ্চা নষ্ট হয়েছে। এ জন্য এবারে বিশেষভাবে যত্ন নেওয়া হয়। নিয়মিত পরিচর্যা করা হয়। যার ফলে দুটি শাবকের জন্ম দিয়েছে দম্পতি। হচ্ছে। রংপুর চিড়িয়াখানাটি ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও সেটি ১৯৯১ সালে উন্মুক্ত করা হয়। উন্মুক্তের সময় ২৩ প্রজাতির প্রাণী প্রদর্শন করা হয়েছিল। বর্তমানে চিড়িয়াখানায় ২৭ প্রজাতির প্রায় আড়াইশ প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সুন্দরবনের বেঙ্গল টাইগার, সিংহ, গন্ডার, জলহস্তী, হরিণ, বানর, চিতাবাঘ, ভালুক, কুমির, অজগর, কচ্ছপ, ময়না, টিয়া, ময়ূর, কাকাতুয়া, কবুতর, বকসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। জিতু কবীর/আরএইচ/এএসএম