নদীর নাব্যতা ফেরাতে খাগড়াছড়ির চেঙ্গী ও মাইনি নদীর খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পরই তা বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি, দ্রুত যেন নদীর খনন কাজ পুনরায় শুরু করা হয়।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহর ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামো চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ভাঙন থেকে রক্ষায় ‘নদী ভাঙন সংরক্ষণ প্রকল্প’-এর আওতায় ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে দুই নদীর ৫৮ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর মধ্যে রয়েছে চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি উপজেলা হতে রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট পর্যন্ত এবং মাইনি নদীর ইয়ারংছড়ি হতে লংগদু মুখ পর্যন্ত এলাকা। নদী দুটির খনন কাজ শুরু হলে দুই তীরের মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়। বর্তমানে মাইনি নদীতে খনন কাজ চলমান থাকলেও বিপত্তি বেধেছে চেঙ্গী নদী নিয়ে। এই নদীর কাজ ৩-৪ মাস চলার পর বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর অংশে কাজ নতুন করে শুরু হলেও, নানিয়ারচর থেকে বুড়িঘাট অংশে কাজ একেবারে বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর মোতালেব, কফিল উদ্দিন ও সত্য প্রিয় চাকমা জানান, নদীর খনন কাজ বন্ধ হওয়ায় তারা হতাশ। তারা বলেন, ‘নদীর খনন কাজ শেষ হলে আমরা উপকৃত হতাম। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদের পানি যখন কমে যায়, তখন নদীপথে মালামাল আনা-নেওয়া করতে সুবিধা হতো। আর খনন করা মাটি দিয়ে যদি নিচু রাস্তাগুলো উঁচু করা যেত, তাহলেও এলাকাবাসী উপকৃত হতো।’ তারা দ্রুত খনন কাজ শুরুর দাবি জানান। আরও পড়ুন: ৮ দাবিতে রাঙ্গামাটিতে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ কাজ বন্ধ থাকার বিষয়ে জানতে নানিয়ারচর অংশের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘ওয়েল এডব্লিউআর (জেভি)’-এর ম্যানেজার মো. মাহবুব এবং মহালছড়ি অংশের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘এআরকেএল-এসএমআইএল (জেভি)’-এর ম্যানেজার মো. শোয়েবের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ বলেন, ‘চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর অংশের কাজ মাঝখানে বন্ধ ছিল। ঠিকাদার ড্রেজার নিয়ে গিয়েছিল, তখন আমরা কাজ বাতিলের নোটিশ করেছিলাম। তবে মহালছড়ি অংশের ঠিকাদার আবার নতুন করে ড্রেজার নিয়ে এসেছে, এখন থেকে কাজ চলমান থাকবে বলে আশা করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘নানিয়ারচরের ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনার কারণে কাজ করতে পারেনি। যার কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওই অংশের কাজ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যেহেতু একটি কাজ বাতিল করা হয়েছে, সেখানে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। আর মাইনি নদীর খনন কাজ চলমান আছে, যা আগামী জুন মাসে শেষ হবে।’ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ৫৮ কিলোমিটার খনন কাজ ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। স্থানীয়রা মনে করেন, এ প্রকল্পের খনন কাজ দ্রুত শেষ হলে এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে।