দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় পুকুর সংক্রান্ত বিরোধের জেরে রাতের আঁধারে পরিকল্পিতভাবে কেটে ফেলা হয়েছে প্রায় তিন হাজার কলা ও সুপারি গাছ।এ ঘটনায় শহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি একই এলাকার নুরুন্নবীসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ভুক্তভোগী ও জমির মালিক শহিদুল ইসলাম জানান, প্রায় ২৪ বছর আগে স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২ দশমিক ৯২ একর জমিসহ একটি পুকুর কেনেন তিনি। পুকুরটির খারিজ ও খাজনাসহ সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হালনাগাদ রয়েছে। সেখানে তিনি নিয়মিত মাছ চাষ করে আসছিলেন। সম্প্রতি পুকুরপাড়ের জমি কাজে লাগানোর জন্য তিনি সেখানে কলা ও সুপারি গাছ রোপণ করেন। ইতিমধ্যে অনেক কলাগাছে ফল ধরেছিল। স্থানীয়রা জানান, প্রতিপক্ষরা দাবি করে আসছিল যে, এটি আগে হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি ছিল এবং জলসেচনের কাজে ব্যবহারের জন্য দেয়া হয়েছিল। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, কিছুদিন আগে রাতের আঁধারে একা পেয়ে প্রতিপক্ষরা তাকে মারধর করে তার একটি পা ভেঙে দেয়। এ বিষয়ে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করলে প্রতিপক্ষ আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১ ডিসেম্বর গভীর রাতে পুকুরপাড়ে থাকা প্রায় দুই হাজার কলাগাছ ও এক হাজার সুপারি গাছ কেটে ফেলা হয়। একই সঙ্গে মাছের ফিডসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী চুরি করে নিয়ে যায় তারা। এতে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান শহিদুল ইসলাম। আরও পড়ুন: ২ দিন বন্ধের পর হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রফতানি শুরু তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত নুরুন্নবী মুঠোফোনে বলেন, ‘গাছ কাটার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। শহিদুল ইসলাম তার লোকজন নিয়ে নিজে গাছ কেটে নাটক তৈরি করেছেন প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য। যেদিন গাছ কাটার অভিযোগ করা হচ্ছে, সেদিন আমার কোনো লোকজন ওই এলাকায় ছিল না। আমি একাই বাড়িতে ছিলাম। আমি তাকে মারধরও করিনি এবং তার গাছের কোনো ক্ষতিসাধন করিনি।’ এ বিষয়ে স্থানীয় কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কারও সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধ থাকতেই পারে, তবে গাছের সঙ্গে এ কেমন শত্রুতা? রাতের আঁধারে এতগুলো গাছ তারা কেটে নষ্ট করল। এরা মানুষ নামের কলঙ্ক। আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে অনুরোধ জানাই, তদন্ত করে যারা এ ক্ষতিসাধন করেছে তাদের বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক। এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় ভুক্তভোগী একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রাথমিক তদন্তের জন্য একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।