সুন্দর আচার-ব্যবহারে মুমিনের আমলের পাল্লা ভারি হয়। ইসলামি শরিয়তের মানদণ্ডেও এটি গুরুত্বপূর্ণ।ইসলামে অন্যের সঙ্গে হাসিমুখে দেখা এবং কথা বলা শুধু একটি ভদ্রতা নয়, বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, প্রতিটি নেক আমলই সদকা, আর তোমার কোনো ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা এবং কোনো ভাইয়ের পাত্রে নিজের বালতি থেকে পানি ঢেলে দেয়াও নেক আমলের অন্তর্ভুক্ত। (তিরমিজি) হাসিমুখে কথা বলাকে সদকা বলা হয়েছে। সদকা মানে হলো দান। অর্থাৎ হাসিমুখে কথা বলা দ্বারা আমরা অন্যকে একটি দান করি, একটি সুন্দর অনুভূতি দান করি। এটি আমাদের আত্মাকে শান্তি দেয় এবং সমাজকে আরও সুন্দর করে তোলে। আরও পড়ুন: হজরত ঈসা (আ.) সম্পর্কে কোরআনে যা বলা হয়েছেনবীজি (স.) সবসময় হাস্যোজ্জ্বল ছিলেন। তিনি সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলতেন। তার সাহাবিরা বর্ণনা করেছেন যে, তিনি এতো হাসতেন যে, তার দাঁত দেখা যেত। রসুলুল্লাহ (স.) এর চেহারায় বেশিরভাগ সময়ই মুচকি হাসি লেগে থাকতো। তিনি সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে হারিস ইবনে জাযআ (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রসুল (স.) এর চেয়ে বেশি মুচকি হাসতে আর কাউকে দেখিনি। (তিরমিজি ৩৬৪১) অন্যকে তুচ্ছ ভেবে গোমড়া মুখে কথা বলা, অহংকার করে গাল ফুলিয়ে রাখা ইসলামে নিষিদ্ধ। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘তুমি মানুষের প্রতি অবজ্ঞাভরে তোমার গাল ফুলিয়ো না এবং জমিনে উদ্ধতভাবে বিচরণ করো না; নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা কোনো দাম্ভিক, অহংকারীকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা লোকমান ১৮) হাসিমুখে কথা বলা একটি সামাজিক বন্ধন সৃষ্টি করে। এটি মানুষের মধ্যে ভালোবাসা ও একতা বৃদ্ধি করে। একটি হাসিখুশি সমাজ গঠনে হাসির ভূমিকা অপরিহার্য। হজরত জারির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন, ইসলাম গ্রহণ করার পর থেকে কখনো আল্লাহর রসুল (সা.) আমাকে তার কাছে যেতে বাধা দেননি এবং যখনই তিনি আমার দিকে তাকাতেন, তখনই মুচকি হাসতেন। (বুখারি ৩০৩৫) আরও পড়ুন: রজব মাসে যেসব আমল করা যায় ইসলামে হাসির গুরুত্ব অপরিসীম। হাসিমুখে কথা বলা আমাদের আত্মাকে শান্তি দেয়, সমাজকে সুন্দর করে তোলে এবং আমাদের নিকট আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে। মুসলমানদের উচিত হাসিমুখে থাকা এবং অন্যকেও হাসাতে উৎসাহিত করা।