প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় সরাসরি আঘাত

‘দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। এই হামলার মধ্যদিয়ে মতপ্রকাশ, বাকস্বাধীনতা ও সমালোচনামূলক কণ্ঠস্বর (ভয়েস অব ডিসেন্স) দমন করার চেষ্টা করা হয়েছে। এই আক্রমণ সরাসরি গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে এবং মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে অর্জিত বাংলাদেশের ধারণার ওপর আঘাত হানা হয়েছে।’ ‘তবে দুর্বৃত্তদের ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন। মানবন্ধনে প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাত শরিফ বলেন, এই হামলা এমন এক সময়ে ঘটেছে যখন দেশ একটি গণতান্ত্রিক উত্তরণের দিকে এগোচ্ছে। এটি সেই উত্তরণকে বাধাগ্রস্ত করার একটি প্রচেষ্টা। তিনি বলেন, যদিও ঘটনার সব কারণ এখনো জানা যায়নি এবং অনেক অভিযুক্ত গ্রেফতার হননি, তবুও গণমাধ্যমের ওপর যে আঘাত হানা হয়েছে, তা স্পষ্ট। গণমাধ্যমের মূল কাজই হলো তর্ক ও মতপার্থক্য প্রকাশ করা, গণতন্ত্র মানেই ভিন্নমতকে সম্মান করা। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি দৈনিকের কার্যালয়ে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ শুধু দুটি গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ নয়; এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত। গত ১৬ বছরে দেড় হাজারের বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন, হাজার হাজার আহত হয়েছেন। সেই রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পরিবর্তনের পরও আজ সাংবাদিকদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে হচ্ছে। পুলিশকে জানানো হলেও তারা কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। ক্র্যাবের সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল বলেন, দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। এর আগেও গণমাধ্যমের ওপর হামলা হয়েছে, কিন্তু বারবার গণমাধ্যম ঘুরে দাঁড়িয়েছে, এবারও দাঁড়াবে। শুধু হামলাকারী নয়, নেপথ্যের উসকানিদাতা ও পরিকল্পনাকারীদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে। অবিলম্বে দায়ীদের গ্রেফতার না করলে এর দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে। ক্র্যাবের সাধারণ সম্পাদক এম এম বাদশাহ’র সঞ্চালনায় মানবন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ডিআরইউয়ের সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, প্রথম আলোর উপ-সম্পাদক লাজ্জাত এনাব মহছি, হেড অব ক্রাইম অ্যান্ড পলিটিক্স টিপু সুলতান, ক্র্যাবের সাবেক সভাপতি মধুসূদন মন্ডল, খায়রুজ্জামান কামাল, কামরুজ্জামান খান, ডিআরইউয়ের সাবেক সহ-সভাপতি ওসমান গণি বাবুল, ক্র্যাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আরিফ, আসাদুজ্জামান বিকু, ক্র্যাবের সহসভাপতি উমর ফারুক আলহাদী, প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক নজরুল ইসলাম, ডিআরইউয়ের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক নাদিয়া শারমিন, রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশনের (র্যাক) সভাপতি শাফি উদ্দিন আহমদ, ক্র্যাবের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নেহাল হাসনাইন, কার্যনির্বাহী সদস্য জিয়া খান, ক্র্যাবের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ইসমাঈল হুসাইন ইমু, ক্র্যাবের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য আমানুর রহমান রনি প্রমুখ। বক্তারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং হামলার দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা অপরিহার্য বলে জোরালো মত দেন। টিটি/ইএ/এমএস