রাশিয়ার ভয়ে সামরিক ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান সুইজারল্যান্ড সেনাপ্রধানের

বর্তমান পরিস্থিতিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার কোনো সামরিক হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম নয় সুইজারল্যান্ড। দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান থমাস সুয়েসলি এমন সতর্কবার্তা দিয়ে আত্মরক্ষার সক্ষমতা জোরদার করতে সামরিক ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এনজেডজেড পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সুয়েসলি জানিয়েছেন, সুইজারল্যান্ড গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ওপর নন-স্টেট অ্যাক্টরদের হামলা এবং সাইবার আক্রমণ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকলেও সেনাবাহিনীর বড় ধরনের সরঞ্জাম ঘাটতি রয়েছে। তিনি বলেন, দূর থেকে আসা হুমকি বা আমাদের দেশের ওপর পূর্ণমাত্রার হামলা প্রতিরোধ করার সক্ষমতা আমাদের নেই। চলতি বছরের শেষ দিকে দায়িত্ব ছাড়তে যাওয়া এই সেনাপ্রধান আরও বলেন, বাস্তব কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে আমাদের মোট সেনার মাত্র এক-তৃতীয়াংশ সম্পূর্ণভাবে সজ্জিত থাকবে। এটা সত্যিই উদ্বেগজনক। সুইজারল্যান্ড এরই মধ্যে প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি, আর্টিলারি ও স্থলভিত্তিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ এবং পুরোনো যুদ্ধবিমান বদলে লকহিড মার্টিনের এফ-৩৫-এ যুদ্ধবিমান কেনার উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এসব পরিকল্পনায় ব্যয় বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং সীমিত ফেডারেল বাজেটের মধ্যে আর্টিলারি ও গোলাবারুদে অতিরিক্ত ব্যয় নিয়ে সমালোচনাও রয়েছে। সুয়েসলি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ ও ইউরোপ অস্থিতিশীল করতে রাশিয়ার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সুইস সমাজে সেনাবাহিনী সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গির তেমন পরিবর্তন হয়নি। তিনি এর জন্য সংঘাতপূর্ণ এলাকা থেকে সুইজারল্যান্ডের ভৌগোলিক দূরত্ব, সাম্প্রতিক যুদ্ধের অভিজ্ঞতার অভাবকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, নিরপেক্ষতার ধারণা ঐতিহাসিকভাবে ভুল। এমন বহু নিরপেক্ষ দেশ আছে যারা অস্ত্রহীন ছিল এবং শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। নিরপেক্ষতার মূল্য তখনই আছে যখন তা অস্ত্র দিয়ে রক্ষা করা যায়। সরকারি পরিকল্পনা অনুযায়ী, সুইজারল্যান্ড ২০৩২ সালের মধ্যে ধীরে ধীরে প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির প্রায় ১ শতাংশে উন্নীত করতে চায়, যা বর্তমানে প্রায় ০.৭ শতাংশ। তবে এটি ন্যাটো দেশগুলোর সম্মত ৫ শতাংশ ব্যয়ের তুলনায় অনেক কম। এই গতিতে চললে সুইস সেনাবাহিনী পুরোপুরি প্রস্তুত হতে ২০৫০ সালের কাছাকাছি সময় লাগবে বলে জানান সুয়েসলি। তিনি বলেন, বর্তমান হুমকির বাস্তবতায় এই সময়সীমা খুবই দীর্ঘ। সূত্র : রয়টার্স কেএম