বিগব্যাশে চোট পাওয়া ডেভিডের বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে শঙ্কা

ফেব্রুয়ারিতে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় বসবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর। তার আগে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়ায় টিম ডেভিডের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ অনিশ্চয়তায় ফেলে দিয়েছে। এই চোটে হোবার্ট হারিকেনসের অধিনায়ক ন্যাথান এলিস নিজেও 'ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছেন' বলে জানিয়েছেন।শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে পার্থ স্টেডিয়ামে পার্থ স্কর্চার্সের বিপক্ষে হারিকেনসের চার উইকেটের জয়ের ম্যাচে উইকেটের মাঝে দৌড়ানোর সময় ডেভিডের হ্যামস্ট্রিংয়ে টান লাগে। ২৯ বছর বয়সী ডেভিডের হতাশা তখন স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল এবং মেডিক্যাল স্টাফের পরামর্শে ২৮ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থেকে ‘রিটায়ার্ড হার্ট’ হন।এটি চলতি বছরে তার দ্বিতীয় হ্যামস্ট্রিং চোট। এর আগে আইপিএলে গুরুতর স্ট্রেইনে পড়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর সফল প্লে-অফ অভিযানে খেলতে পারেননি। প্রায় দুই মাস ক্রিকেটের বাইরে ছিলেন এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি সিরিজে তাকে দলে ফেরানো হলেও সেখানে পাঁচ ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটিতে খেলেন।হারিকেনস নিশ্চিত করেছে, চোটের মাত্রা জানতে ডেভিড শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) স্ক্যান করাবেন।আরও পড়ুন: দুই দিনেই শেষ মেলবোর্ন টেস্ট, উইকেট নিয়ে স্মিথ-স্টোকসের ভিন্ন মতবিগ ব্যাশ লিগের মৌসুম চলবে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত, ফলে শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে ফিরতে ডেভিডের হাতে খুব বেশি সময় নেই। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো ভারত ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিতব্য ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হতে খুব বেশি দেরি নেই। ৭ ফেব্রুয়ারি এবারের আসর শুরু হয়ে চলবে ৮ মার্চ পর্যন্ত। শর্ট ফরম্যাটের ক্রিকেটে বিশ্বের অন্যতম বিধ্বংসী ব্যাটার ডেভিডকে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ অভিযানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।চ্যানেল সেভেনকে ডেভিড বলেন, ‘দুই রান নিতে ফিরে আসার সময় একটু টান অনুভব করেছি। আদর্শ নয়, তবে চোট বাড়াতে চাইনি এবং ছেলেদের ওপর পুরো ভরসা ছিল ম্যাচ জিতিয়ে দেবে। এখন অপেক্ষা করে দেখতে হবে।’অধিনায়ক ন্যাথান এলিস আশাবাদী, ডেভিড সময়মতো সেরে উঠবেন। তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে কী, আমাদের কয়েকজনেরই এক চোখ বিশ্বকাপের দিকে আছে। বন্ধু হিসেবে সবার আগে বলছি—সে হারিকেনসের কয়েকটি ম্যাচ মিস করতে পারে ভেবে আমি ভেঙে পড়েছি।’তিনি যোগ করেন, ‘তবে আশা করছি আমরা সব সঠিক পদক্ষেপ নেব এবং টুর্নামেন্টের শেষ ভাগে তাকে ঠিক করে তুলতে পারব… এরপর অস্ট্রেলিয়ার রঙে (জার্সি) বিশ্বকাপেও।অস্ট্রেলিয়ান দলে সে যে কতটা বড় ফিগার, তা গোপন কিছু নয়। চার নম্বরে ব্যাট করে দাপট দেখাচ্ছে। আশা করছি চোট খুব গুরুতর নয়, আর বিশ্বকাপের আগে আমরা তাকে বেগুনি জার্সিতে কয়েকটা ম্যাচ খেলাতে পারব।’৬৮টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ডেভিডের গড় ৩৬.২৭ এবং স্ট্রাইক রেট ১৬৮.৮৮। চলতি বছর চার-পাঁচ নম্বরে তার উন্নীত হওয়া তাকে প্রথম টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি এনে দিয়েছে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্লেয়ার অব দ্য সিরিজের পুরস্কারও জিতেছেন।স্কর্চার্সের বিপক্ষে তার ইনিংসটি হারিকেনসের জয়ে বড় ভূমিকা রাখে। ৩ উইকেটে ৩৯ রান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে তারা তিন বল বাকি থাকতে ম্যাচ জেতে। ১৫তম ওভারে খুঁড়িয়ে মাঠ ছাড়ার আগে ডেভিড তিনটি চার ও দুটি ছক্কা মারেন। আরও পড়ুন: লোকসানের চিন্তায় ঘুম হারাম ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সিইও’রএলিস বলেন, ‘ও দাপট দেখায়, ভয়ংকর উপস্থিতি তৈরি করে। ১০ ওভারের মাথায় সে বলেছিল, "আমি সার্জ নেব", আর আমি খুব খুশি হয়েছিলাম। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা যেটা হ্যামস্ট্রিং চোট ভাবছি, সেটার কারণে সে শেষটা দেখে যেতে পারেনি। কিন্তু টিমি ডেভিড বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের একজন—আমরা তাকে পেয়ে সত্যিই ভাগ্যবান।’এদিকে আগের ম্যাচে চোট পেয়ে এদিনের জয় মিস করা ম্যাথিউ ওয়েডের সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) হোবার্টে মেলবোর্ন রেনেগেডসের বিপক্ষে ম্যাচে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে।