সংসদ সদস্যদের দুর্নীতিতে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ইউক্রেনের পার্লামেন্টে অভিযান চালিয়েছে দেশটির দুটি দুর্নীতি দমন সংস্থা। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানী কিয়েভে পার্লামেন্ট ভবনে অভিযান চালান কর্মকর্তারা। এ সময় নিরাপত্তা কর্মীর বাধার মুখে পড়েন বলেও জানিয়েছেন তারা।এএফপির প্রতিবেদন মতে, নতুন একটি দুর্নীতি তদন্তে কয়েকজন সংসদ সদস্যের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। বিষয়টি তদন্ত করার লক্ষ্যে শনিবার পার্লামেন্টে তল্লাশি অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন সংস্থার কর্মকর্তা। তবে নিরাপত্তা কর্মীরা তাদেরকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন। ইউক্রেনের জাতীয় দুর্নীতি দমন সংস্থা ন্যাশনাল অ্যান্টি-করাপশন ব্যুরো (নাবু) এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘গোপন অভিযান চালিয়ে নাবু ও স্পেশালাইজড অ্যান্টি-করাপশন প্রসিকিউটরস অফিস (সাপো) একটি সংগঠিত অপরাধী চক্রের সন্ধান পেয়েছে। এই চক্রে দেশটির বর্তমান সংসদের কয়েকজন সদস্যও রয়েছেন।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘‘ইউক্রেনের পার্লামেন্ট ভারখোভনা রাদার বিভিন্ন কমিটিতে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার সময় রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিভাগের কর্মীরা নাবু কর্মকর্তাদের বাধা দিয়েছেন।’ এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে আলোচনার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। স্থানীয় সময় রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ফ্লোরিডায় দুই প্রেসিডেন্টের বৈঠক হওয়ার কথা। আরও পড়ুন: শান্তি চুক্তি চূড়ান্ত করতে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন জেলেনস্কি বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা এবং কিয়েভের জন্য মার্কিন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টারাও। জেলেনস্কির দাবি, প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ সম্পন্ন। শতভাগ প্রস্তুত করাই কিয়েভেরে লক্ষ্য। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি জানান, নতুন বছরের আগেই উচ্চপর্যায়ের এই বৈঠক থেকে আসতে পারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। তবে মস্কো ও কিয়েভের অবস্থানের ব্যবধান এখনও স্পষ্ট। জ্যেষ্ঠ রুশ কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চলছে, তা ইউক্রেনের প্রস্তাবের সঙ্গে মৌলিকভাবে ভিন্ন। আলোচনায় ‘ধীর কিন্তু স্থির অগ্রগতির’ কথা বললেও ডনবাস অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারে জেলেনস্কির প্রস্তাবে কোনো মন্তব্য করেনি রাশিয়া। জেলেনস্কি ইঙ্গিত দিয়েছেন, রাশিয়া ডনবাস অঞ্চলের যে অংশগুলো দখলে নিতে পারেনি, সেখানে একটি নিরস্ত্রীকৃত "ফ্রি ইকোনমিক জোন" গঠনের বিষয়টি আলোচনায় থাকতে পারে। আরও পড়ুন: দাবি জেলেনস্কির উপদেষ্টার / ‘টাকার অভাবে’ নির্বাচন করতে পারছে না ইউক্রেন কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্যেই ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। খারকিভে রুশ হামলায় শিশুসহ হতাহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এছাড়া ইউক্রেনের মধ্যাঞ্চলীয় চেরকাসি অঞ্চলের উমান শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দুই শিশুসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় গভর্নর জানান, হামলায় অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে রাশিয়ার রোস্তভ অঞ্চলের নভোশাখতিনস্ক তেল শোধনাগারে হামলার দাবি করেছে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী। তাদের দাবি, স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে এই হামলা চালানো হয়েছে। ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ জানান, এই শোধনাগার দক্ষিণ রাশিয়ায় তেলপণ্যের অন্যতম বড় সরবরাহকারী এবং রুশ সেনাবাহিনীর রসদ সরবরাহে জড়িত।