জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় বসছে সাড়ে ৩ লাখ পরীক্ষার্থী

দীর্ঘ ১৬ বছর পর অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে রোববার (২৮ ডিসেম্বর)। এদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের ৬১১টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা নেওয়া হবে। এতে অংশ নেবে সারাদেশের প্রায় সাড়ে তিন লাখ পরীক্ষার্থী। প্রকাশিত সময়সূচি অনুযায়ী— প্রথমদিন রোববার বাংলা বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) ইংরেজি, মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) গণিত এবং আগামী ৩১ ডিসেম্বর (বুধবার) বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার সব প্রশ্ন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের আলোকে প্রস্তুত করা হয়েছে। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, দীর্ঘ বিরতির পর এবার জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হচ্ছে। এ বছর অংশ নিচ্ছে মোট ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫৯১ জন শিক্ষার্থী। দেশের ৬১১টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠেয় এ পরীক্ষা নির্বিঘ্ন করতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মুদ্রণ, বিতরণ এবং কেন্দ্র ব্যবস্থাপনায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। ২০ পরীক্ষার্থীর গার্ডে এক শিক্ষক, থাকবে সিসি ক্যামেরাওএদিকে, জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য পরীক্ষার কক্ষ পরিদর্শক হিসেবে একজন শিক্ষক রাখা হয়েছে। প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসানো, ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে পরীক্ষার্থীরা অনুমোদিত ৮ মডেলের সায়েন্টিফিক নন-প্রোগ্রামেবল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে। এরমধ্যে পরীক্ষার্থীরা ক্যাসিও (Casio) ব্র্যান্ডের নন–প্রোগ্রামেবল সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটরের মধ্যে Fx-82MS, Fx-100MS, Fx-570MS, Fx-991MS, Fx-991Ex, Fx-991ES, Fx-991ES Plus এবং Fx-991CW মডেল ব্যবহার করতে পারবে। এছাড়া সাধারণ (নন–সায়েন্টিফিক) ক্যালকুলেটর ব্যবহারের সুযোগ থাকবে। অনুমোদিত মডেলের বাইরে অন্য কোনো প্রোগ্রামেবল বা নিষিদ্ধ ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না। ৫ বিষয়ে পরীক্ষা হবে ৪০০ নম্বরেরনীতিমালা অনুযায়ী, জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় মোট পাঁচটি বিষয়ে মূল্যায়ন করা হবে। বিষয়গুলো হলো— বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়। এরমধ্যে বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে ১০০ নম্বর করে থাকবে। বিজ্ঞান ও বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে ৫০ নম্বর করে পরীক্ষা নেওয়া হবে। সব মিলিয়ে মোট ৪০০ নম্বরের ওপর বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে কারা, বৃত্তি কীভাবেনীতিমালা অনুযায়ী— মাধ্যমিক বা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অষ্টম শ্রেণির সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী (সপ্তম শ্রেণির সব প্রান্তিকের সামষ্টিক মূল্যায়নের ফলের ভিত্তিতে) জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের দুই ধরনের জুনিয়র বৃত্তি দেওয়া হবে। ট্যালেন্টপুল বৃত্তি ও সাধারণ বৃত্তি। সব ধরনের বৃত্তির ৫০ শতাংশ ছাত্রদের এবং ৫০ শতাংশ ছাত্রীদের জন্য নির্ধারিত থাকবে। তবে নির্ধারিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে ছাত্রের বৃত্তি ছাত্রী দ্বারা এবং ছাত্রীর বৃত্তি ছাত্র দ্বারা পূরণ করা যাবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বরাদ্দ থাকবে। সবশেষ ২০০৯ সালে অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষা নিয়েছিল সরকার। এরপর অষ্টম শ্রেণিতে চালু করা হয়েছিল জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা। সমালোচনার মুখে ২০২৩ সালে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা না নিয়ে একই সিলেবাসের আদলে অষ্টম শ্রেণিতে বার্ষিক পরীক্ষার নেওয়া হয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর গত বছরও জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা হয়নি। নেওয়া হয়নি বৃত্তি পরীক্ষাও। এবছর থেকে দীর্ঘসময় পর অষ্টম শ্রেণিতে ফের চালু হচ্ছে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা। এএএইচ/এমএএইচ/এমএস