তারেক রহমানের অনুষ্ঠানের কথা বলে চাঁদা দাবি, না পেয়ে দোকানে তালা‍

পটুয়াখালীতে তারেক রহমানের অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা বলে এক ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবি এবং টাকা না পেয়ে দোকানে তালা লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পৌর বিএনপির উপদেষ্টা কমিটির নেতা শাহিন গাজী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী তৌহিদুল ইসলাম (৫৮) পটুয়াখালী শহরের কলাতলা হাউজিং স্টেট এলাকার বাসিন্দা। তার অভিযোগ, শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বাড়ির পাশের জমিতে নির্মিত তার দোকানে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। তৌহিদুল ইসলাম জানান, গত ১৯ ডিসেম্বর দোকানের সামনে কাজ করার সময় শাহিন গাজী তার কাছে এসে বলেন, ‌‘তারেক রহমান বাংলাদেশে আসছেন। আমরা ঢাকায় যাবো, খরচ দেন।’ এসময় তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে চলে যান। পরে এলাকার ঠিকাদার জাহাঙ্গীরের মাধ্যমে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। তৌহিদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমি জেলা বিএনপি নেতা মোস্তাক আহমেদ পিনু ভাইকে বিষয়টি জানিয়েছি, তারপরও ওরা আমার দোকানে তালা দিলো। আমার শারীরিক ও আর্থিক অবস্থার কথা জানিয়ে পাঁচ হাজার টাকা দিতে রাজি হই। কিন্তু বিষয়টি জানার পর শাহিন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর ঢাকার কর্মসূচি শেষ করে পটুয়াখালী ফিরে এসে আমার দোকানে তালা লাগিয়ে দেন এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের হুমকি দেন।’ ভুক্তভোগীর দাবি, তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। তবুও তাকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আগেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে হেপাটাইটিস-বি রোগে আক্রান্ত হওয়ায় চিকিৎসার জন্য ২০ ডিসেম্বর থেকে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন বলেও জানান। এ বিষয়ে ঠিকাদার জাহাঙ্গীর বলেন, ‘শাহিন গাজী আমাকে তৌহিদুল ইসলামের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা এনে দিতে বলেছিলেন। তারেক রহমানের অনুষ্ঠানে ঢাকায় যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। আমি বিষয়টি জানালে তৌহিদ ভাই পাঁচ হাজার টাকা দিতে রাজি হন। এরপর শাহিন রাগারাগি করেন। পরে শুনেছি দোকানে তালা দেওয়া হয়েছে।’ তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পৌর বিএনপির উপদেষ্টা কমিটির নেতা শাহিন গাজী বলেন, ‘তৌহিদুল ইসলাম আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। টাকা চাওয়া বা দোকানে তালা দেওয়ার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’ জাহাঙ্গীরের মাধ্যমে চাঁদা দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জাহাঙ্গীর নিজেও আওয়ামী লীগ করে। আপনারা খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন।’ পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘অন্যায়ভাবে কারও দোকানে তালা দেওয়া আইনসম্মত নয়। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান টোটন বলেন, ‘বিষয়টি এখনো আমার জানা নেই। তবে তারেক রহমানের নাম ব্যবহার করে কেউ অন্যায় করলে সাংগঠনিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ মাহমুদ হাসান রায়হান/এসআর