তাবলিগ জামাতের পুরোনো সাথিদের নিয়ে ৩ দিনব্যাপী খুরুজের জোড় শুরু হবে আগামী ২ জানুয়ারি। টঙ্গীতে অবস্থিত বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে এ খুরুজের জোড় অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে প্রয়োজনীয় মাঠ প্রস্তুতির কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে।রোববার (২৮ ডিসেম্বর) তাবলীগ জামাত বাংলাদেশ শুরায়ী নেজামের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আগামী ২, ৩ ও ৪ জানুয়ারি ২০২৬ তারিখে তাবলীগ জামাত বাংলাদেশ (শুরায়ী নেজাম)-এর অধীনে খুরুজের জোড় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে অংশগ্রহণ করবেন, যারা আল্লাহর রাস্তায় এক চিল্লা, তিন চিল্লা ও বিদেশ সফরের উদ্দেশ্যে বের হবেন এবং যারা মেহনতের মাধ্যমে সাথিদের এ কাজে উদ্বুদ্ধ করে নিয়ে আসবেন শুধু তারাই। আরও পড়ুন: ইজতেমা নিয়ে ছয়টি দাবি জানালেন শুরায়ী নেজাম অনুসারীরা হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, এ সময় টঙ্গীতে ৫৯তম বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পর তা আয়োজন করা হবে। সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে তাবলীগ জামাত বাংলাদেশ (শুরায়ী নেজাম) গত ৩ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি দেশবাসীকে অবহিত করেছে। তিনি আরও বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য, ‘সাদপন্থী’ নামে পরিচিত একটি কুচক্রী মহল এই খুরুজের জোড়কে ইজতেমা আখ্যা দিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিভ্রান্তি ও ফেতনা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এমনকি তারা নিজেরাও একই স্থানে ইজতেমা আয়োজনের দাবি জানাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। হাবিবুল্লাহ বলেন, অতীতে তারা দুইবার প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত অমান্য করে সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছে। ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর তারা ইজতেমা মাঠ প্রস্তুতির কাজে নিয়োজিত তাবলিগের সাথিদের ওপর হামলা চালায়, যেখানে প্রায় ৫ হাজার সাথি আহত হন। দ্বিতীয়বার, ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে তারা পুনরায় বর্বর হামলা চালায়, এতে চারজন সাথি শহীদ হন এবং শতাধিক সাথি আহত হন। এই জঘন্য ও ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডের ফলে তারা নীতিগত ও নৈতিকভাবে ইজতেমা মাঠে কোনো প্রকার জোড় বা ইজতেমা আয়োজনের অধিকার হারিয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ প্রেক্ষাপটে, ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার পূর্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়-- সাদপন্থীরা ১৪–১৬ ফেব্রুয়ারি ইজতেমা করতে পারবে, তবে পরবর্তী বছরগুলোতে তারা টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে কোনো ধরনের ইজতেমা বা তাবলীগী কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। নির্ধারিত শর্ত পূরণের সাপেক্ষেই তারা উক্ত সময়ের ইজতেমা সম্পন্ন করে, যা পুরো দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে (যদিও সেখানে অল্পসংখ্যক মানুষের সমাগম হয়েছিল)। আরও পড়ুন: ইজতেমা মাঠে সাদপন্থীদের হামলায় হতাহতের বিচার দাবি শেষে তিনি বলেন, পরবর্তীতে তারা এ শর্ত মেনেই চলতি বছরে তাদের কার্যক্রম বিভাগীয় পর্যায়ে সম্পন্ন করেছে। অথচ হঠাৎ করেই আবার তারা ইজতেমা মাঠকে কেন্দ্র করে ষড়যন্ত্রমূলক তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে, যা শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় পরিবেশ ও জাতীয় স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ।