রাজশাহীর গাছে গাছে ফুটতে শুরু করেছে আগাম মুকুল। তবে সম্পূর্ণ মুকল আসতে আরও সময় লাগবে মাস দুয়েক। এদিকে শেষ সময়ে গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এবার বেশ ভালো আবহাওয়া হওয়ায় ফলন নিয়ে আশাবাদী কৃষকেরা। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, রাজশাহীতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমের আবাদ হয়েছিল ১৯ হাজার ৬০৩ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫২ মেট্রিক টন। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে আমচাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ৬০৩ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৬ হাজার মেট্রিক টন। সরেজমিনে, রাজশাহীর কয়েকটি উপজেলার আম বাগান পরিদর্শন করতে গেলে দেখা যায়, আমচাষিরা গাছে গাছে কীটনাশক মিশ্রিত পানি স্প্রে করছেন। পাশাপাশি গাছের বাড়তি যত্ন নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গত কয়েকদিনের কুয়াশার কারণে মুকুলকে ছত্রাকের আক্রমণ থেকে বাঁচাতে ছত্রাকনাশক স্প্রে ব্যবহার করছেন তারা। পবা উপজেলার আমচাষি আমিরুল ইসলাম বলেন, এ বছর আমের আগাম মুকুল আসতে শুরু করেছে। আমরাও গাছের গোড়া খুঁড়ে পানি ও স্প্রে করছি। গত বছরের চেয়ে টানা শীত ও কুয়াশার তীব্রতা এ বছর অনেক কম। ফলে আশা করছি এবার ভালো ফলন পাবো। চারঘাট এলাকার আমচাষি মাহতাব আলী বলেন, বছরজুড়ে গাছের পরিচর্যা করার কারণে এখন প্রতি বছরই আমের ভালো ফলন পাওয়া যায়। এবারো আমার গাছের পরিচর্যা করছি। এরই মধ্যে মুকুল দেখা দিয়েছে দুই একটি গাছে। তবে যদি সঠিক সময়ে হপার বা শোষক পোকা দমন করা না যায় তাহলে আমের ফলন কমে যেত পারে। রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, রাজশাহীর আম বাগানগুলোতে এখনো পর্যাপ্ত মুকুল আসেনি। ফেব্রুয়ারি মার্চের দিকে পরিপূর্ণ মুকুল আসবে। এখন থেকে গাছের ভালো যত্ন নিলে এবং গাছের রোগবালাই দমনে কাজ করলে ভালো মুকুল আসবে। তবে গতবারের তুলনায় এবারের আবহাওয়া ভালো থাকায় আশা করছি গাছে ভালো পরিমাণ আম আসবে। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাসির উদ্দিন জানান, মাঠপর্যায়ে আমের ভালো উৎপাদনের লক্ষ্যে আমরা চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। আমে ভালো উৎপাদনের লক্ষ্যে একটি গাছে বছরে দুইবার কীটনাশক দিতে হয়। মাঠ পর্যায়ে আমাদের সহকারী ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করছেন। গত বছর রাজশাহীতে হেক্টর প্রতি আমের উৎপাদন হয়েছিল ১২ দশমিক সাড়ে ৭ হেক্টর। চলতি বছরে আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ৮ হেক্টর। সে অনুযায়ী আমের উৎপাদন এবছর ভালোই হবে। সাখাওয়াত হোসেন/এমএন/জেআইএম