ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি অংশে গোমতী নদীর ওপর অবস্থিত পুরাতন সেতুটি এখন চরম ঝুঁকির মুখে। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় সেতুর গার্ডার ও অ্যাবাটমেন্টের মধ্যকার গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। এর ফলে যান চলাচলের সময় সেতুটি অস্বাভাবিকভাবে কেঁপে উঠছে, যা প্রতিদিন হাজারো যাত্রী ও চালকের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।স্থানীয়দের অভিযোগ, বিশেষ করে ভারী ট্রাক, বাস ও কাভার্ডভ্যান চলাচলের সময় সেতুর কম্পন আরও বেড়ে যায়। হঠাৎ ব্রেক কিংবা ওভারটেকের সময় যানবাহনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। এমন দুর্ঘটনায় প্রাণহানির পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে পারে যানবাহন, পণ্য এবং আশপাশের অবকাঠামো। স্থানীয় বাসিন্দা হাসান সময় সংবাদকে বলেন, ‘সেতুতে উঠলেই মনে হয় দুলে উঠছে। গাড়ি চললে কাঁপনটা স্পষ্ট বোঝা যায়। এখানে যদি বড় কোনো দুর্ঘটনা হয়, অনেক মানুষের প্রাণ যেতে পারে।’ নিয়মিত এই সড়কে চলাচলকারী এক বাসচালক সময় সংবাদকে বলেন, যাত্রী নিয়ে সেতু পার হতে ভয় লাগে। ভারী গাড়ি উঠলে সেতু এমনভাবে কাঁপে যে স্টিয়ারিং ঠিক রাখা কঠিন হয়ে যায়। এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আরেক স্থানীয় ব্যবসায়ী মাহফুজ সময় সংবাদকে বলেন, ‘এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন মালামাল আনা-নেয়া হয়। সেতুতে কিছু হলে শুধু মানুষ না, ব্যবসা বাণিজ্য আর পণ্যেরও বড় ক্ষতি হবে।’ আরও পড়ুন: তারেক রহমানের সংবর্ধনায় আসার পথে বাস দুর্ঘটনা, আহত ৩০ কবির মিয়া সময় সংবাদকে বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মতো দেশের অন্যতম ব্যস্ত সড়কে এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এতে প্রাণহানির পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’ এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানায়, সেতুর গার্ডার ও অ্যাবাটমেন্টের মধ্যকার যন্ত্রাংশে ত্রুটি শনাক্ত করা হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আপাতত পুরাতন সেতুর ব্যবহার সীমিত করে নতুন চার লেনের সেতু দিয়ে উভয়মুখী যান চলাচলের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই নতুন সেতুতে কাজ শুরু করে দেয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রহিম সময় সংবাদকে বলেন, গার্ডার ও অ্যাবাটমেন্টের মধ্যকার যন্ত্রাংশে ত্রুটি শনাক্ত করা হয়েছে। ঝুঁকি এড়াতে আমরা আপাতত নতুন চার লেনের সেতু দিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থা করেছি। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ নেয়া হবে। সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, ১৯৯৫ সালে গোমতী নদীর ওপর নির্মিত এই দুই লেনের সেতুটিতে রয়েছে মোট ১৭টি স্প্যান। প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার যানবাহন সেতুটির ওপর দিয়ে চলাচল করে। দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় সেতুর গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশে এখন কাঠামোগত দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।