ইরানের সামরিক বাহিনী আগের চেয়ে শক্তিশালী

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও ইউরোপ তার দেশের বিরুদ্ধে একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। এই মন্তব্য আসে এমন এক সময়ে যখন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সরকারি ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পেজেশকিয়ান বলেন, আমার মতে, আমরা এখন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও ইউরোপের সঙ্গে একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে আছি। তারা চায় না আমাদের দেশ নিজের পায়ে দাঁড়াক। তিনি বলেন, ইরানের সামরিক বাহিনী শক্ত অবস্থানে রয়েছে এবং নানা সমস্যার মধ্যেও অস্ত্র ও জনবলের দিক থেকে আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়েছে। যদি তারা আবার হামলা চালাতে চায়, তাহলে আরও কঠোর জবাব পাবে। পেজেশকিয়ান বলেন, এই যুদ্ধ আগের যুদ্ধগুলোর মতো নয়। তার ভাষায়, এই যুদ্ধ ইরাকের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ। এটি অনেক বেশি জটিল ও কঠিন। তিনি ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত চলা ইরান-ইরাক যুদ্ধের প্রসঙ্গ টানেন। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ করলেও তেহরান তা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। চলতি বছরের জুনে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধ হয়। ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলায় ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনার পাশাপাশি বেসামরিক এলাকাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইরানের কর্তৃপক্ষের মতে, এতে এক হাজারের বেশি মানুষ হতাহত হয়। পরে যুক্তরাষ্ট্রও ইসরায়েলের সঙ্গে যোগ দিয়ে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়। এর ফলে এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া যুক্তরাষ্ট্র–ইরান পারমাণবিক আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়। জানুয়ারিতে আবার হোয়াইট হাউজে ফেরার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতি নতুন করে জোরদার করেন। এর আওতায় দেশটির অর্থনীতি দুর্বল করতে এবং তেলের আয় কমাতে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্লোরিডার মার-আ-লাগোতে নেতানিয়াহুর ট্রাম্পের সঙ্গে আসন্ন বৈঠকে ইরানের বিরুদ্ধে আরও সামরিক পদক্ষেপের জন্য চাপ দেওয়া হবে। এবার লক্ষ্য হতে পারে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি। সূত্র: আল-জাজিরা এমএসএম