ভারতের বাজার থেকে প্রতি কেজিতে ৩০ সেন্ট কম মূল্যে সুতা আমদানিতে অসম প্রতিযোগিতার কারণে বাংলাদেশের টেক্সটাইল খাত চরম অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল।রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশান ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ভারতের ডাম্পিংয়ের বিরুদ্ধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে আগামী ৬ মাসের মধ্যে দেশের সকল টেক্সটাইল মিল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। গত ২২ মাসে ভারত থেকে সুতা আমদানির পরিমাণ ১৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারত কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই বাংলাদেশ থেকে সুতা আমদানি বন্ধ রাখলেও বাংলাদেশে তাদের সুতা নামমাত্র মূল্যে প্রবেশ করছে। এই ডাম্পিং প্রক্রিয়ার কারণে দেশীয় ৫০টি স্পিনিং মিল ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে এবং প্রায় ২ লাখ শ্রমিক কর্মসংস্থান হারিয়েছেন।বিটিএমএ সভাপতি জানান, বর্তমানে এই খাতে ২৩ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ থাকলেও ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ এবং উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় উদ্যোক্তারা দিশেহারা। আরও পড়ুন: নরসিংদীতে স্পিনিং মিলে আগুনতিনি বলেন, 'আমার নিজের পাঁচটি কারখানার একটি ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে এবং যথাযথ সহায়তা না পেলে বাকিগুলো সচল রাখা অসম্ভব হবে।' জিডিপিতে ১৩ শতাংশ অবদান রাখা সত্ত্বেও এই খাতের উন্নয়নে সরকারের যথাযথ নজর নেই বলে তিনি অভিযোগ করেন।সংকট সমাধানে অবিলম্বে গ্যাসের দাম পুনর্নির্ধারণ করে ৬০ টাকা দরে নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানান বিটিএমএ সভাপতি। পাশাপাশি নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণে দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। বিশেষ করে রেমিট্যান্স প্রবাহ থেকে ১ বিলিয়ন ডলার এই খাতের জরুরি সহায়তায় বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।শওকত আজিজ রাসেল আরও বলেন, কারখানা বন্ধ হলে বেকারত্ব বাড়বে, যা দেশে চুরি ও ছিনতাইসহ সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করবে। তাই আগামী দিনের রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছে তার অনুরোধ, দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসেবে পরিচিত এই টেক্সটাইল খাতকে বাঁচাতে ঢালাও পলিসির বদলে খাতভিত্তিক সুনির্দিষ্ট নীতি গ্রহণ করা হোক।