সমমনা দলগুলোর মধ্যে আসন সমঝোতা প্রায় সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, খুব দ্রুতই এর বিস্তারিত জানানো হবে। একই সঙ্গে ঘোষিত তারিখের যেন কোনো হেরফের না হয় এবং নির্ধারিত সময়েই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে জামায়াতের নেতৃত্বে আন্দোলনরত আট দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশ যে সংকটময় সময় পার করছে, সেই বাস্তবতা থেকে প্রিয় বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিতে শোষণ-বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়েই আটটি দল দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ আরও দুটি দল—কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রমের নেতৃত্বাধীন এলডিপি এবং এনসিপি—এই জোটে সম্পৃক্ত হয়েছে। তিনি জানান, এনসিপির সঙ্গে এরই মধ্যে বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। সময় স্বল্পতার কারণে তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে না পারলেও দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সরাসরি বৈঠকে অংশ নিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন। শিগগির এনসিপি আলাদা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করবে। জামায়াত আমির বলেন, ৩০০ আসনেই নির্বাচনি সমঝোতা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে আলোচনা হয়েছে এবং প্রায় সব আসনে সমঝোতা চূড়ান্ত। শেষপর্যায়ে যুক্ত হওয়া দুই দলের কারণে কিছু কারিগরি বিষয় রয়ে গেছে, যা মনোনয়ন দাখিলের পর পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। নির্বাচন প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ঘোষিত তারিখেই একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এখনো সবার জন্য সমতল মাঠ তৈরি হয়নি। সংবিধানিক ও নৈতিক দায়িত্ব পালনে নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। কোনো ধরনের পক্ষপাত, ভয়ভীতি বা লোভ-লালসার কাছে নতি স্বীকার করলে জাতি তা মেনে নেবে না। তিনি বলেন, বিগত কয়েকটি নির্বাচনে ভোটাধিকার থেকে মানুষ বঞ্চিত হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো প্রক্রিয়া মেনে নেওয়া হবে না। ভোটাধিকার রক্ষায় এই জোট ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করবে। সংবাদ সম্মেলনে ডা. শফিকুর রহমান ২০২৪ সালের গণআন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণ করেন। তিনি শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই জোট শুধু নির্বাচনি নয়—এটি রাজনৈতিক, আন্দোলন ও দেশ গঠনের জোট। জাতীয় স্বার্থে ও জাতীয় ইস্যুতে ভবিষ্যতেও দলগুলো একসঙ্গে কর্মসূচি পালন করবে বলে জানান তিনি। শেষে তিনি সাংবাদিকদের সহযোগিতা ও উপস্থিতির জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জাতীয় স্বার্থে এই ঐক্য আরও দৃঢ় হবে, ইনশাআল্লাহ। সংবাদ সম্মেলনে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ডা. আহমদ আব্দুল কাদের, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, নেজামে ইসলাম পার্টি বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির আব্দুল মাজেদ, ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান হামিদী, জাগপার সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা উপস্থিত ছিলেন। ইএআর/ইএ/এমএস