সেনা শাসনের ছায়ায় মিয়ানমারের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম

গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা ও নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নের মধ্যে রোববার (২৮ ডিসেম্বর) মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর এটিই দেশটির প্রথম নির্বাচন। তবে বিভিন্ন শহরের বাসিন্দাদের মতে, ভোটার উপস্থিতি ছিল তুলনামূলকভাবে খুবই কম। সামরিক জান্তা দাবি করেছে, তিন ধাপে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচন দেশটিতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনবে। কিন্তু জাতিসংঘ, পশ্চিমা দেশগুলো ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই ভোট অবাধ, সুষ্ঠু বা বিশ্বাসযোগ্য নয়। কারণ জান্তাবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি এবং নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা করাও আইনত নিষিদ্ধ। নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি এখনও আটক রয়েছেন এবং তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) আবার ক্ষমতায় ফেরার পথে রয়েছে। রোববার অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপের ভোটে ২০২০ সালের নির্বাচনের তুলনায় ভোটার উপস্থিতি অনেক কম ছিল বলে বিভিন্ন শহরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন। জান্তার ঘোষণায় বলা হয়েছে, মোট ৩৩০টি টাউনশিপের মধ্যে ২৬৫টিতে ধাপে ধাপে ভোট হবে। তবে সব এলাকায় সেনাবাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেই। নির্বাচনের প্রথম ধাপের প্রাথমিক ফল রোববার বিকেলে ঘোষণা করার কথা। চূড়ান্ত ফল কবে প্রকাশ হবে, তা জানানো হয়নি। রাজধানী নেপিদোতে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ভোট দেন জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং। তিনি বলেন, সংসদ বসলে নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে। জাতিসংঘের মানবাধিকার দূত টম অ্যান্ড্রুস বলেছেন, এই নির্বাচন মিয়ানমারের সংকট থেকে বেরিয়ে আসার পথ নয় এবং এটিকে প্রত্যাখ্যান করা উচিত। বাসিন্দাদের ভাষ্য অনুযায়ী, ইয়াঙ্গুন, মান্দালয়সহ বড় শহরগুলোতে ভোটকেন্দ্রগুলো বেশিরভাগ সময়ই ফাঁকা ছিল। কিছু এলাকায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীর আহ্বানে মানুষ ভোট বর্জন করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, চলমান সংঘাতের মধ্যে এই নির্বাচনের মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার গঠন করা কঠিন হবে। সূত্র: রয়টার্স এমএসএম