নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করে সাবেক তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম জানিয়েছেন, তিনি নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির অংশ হচ্ছেন না। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাত সোয়া আটটার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা জানান।মাহফুজ আলমের এই পোস্টের কয়েক ঘন্টা আগে আট দলীয় জোটের সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান জানান, এনসিপি তাদের সঙ্গে নির্বাচনী জোটে থাকছে। আর মাহফুজ যখন ফেসবুকে পোস্টটি দেন তখন এনসিপির শীর্ষ নেতাদের একটি সংবাদ সম্মেলন চলছে। ওই সংবাদ সম্মেলনে তারা জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে নির্বাচনী জোটে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেন।ফেসবুক পোস্টে মাহফুজ আলম লেখেন, “আমার অবস্থান স্পষ্ট। নূতন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক বন্দোবস্ত, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক লড়াই, সামাজিক ফ্যাসিবাদ মোকাবেলা, রিকন্সিলিয়েশন, দায়-দরদের সমাজ—এই কথাগুলো আমি বারবার বলেছি।”তিনি জানান, নাগরিক কমিটি ও এনসিপি জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির নেতৃত্বে সংগঠিত হয়েছিল এবং সেখানে তার জুলাই সহযোদ্ধারা যুক্ত থাকায় গত দেড় বছর ধরে তিনি পরামর্শ ও নীতিগত সহায়তা দিয়েছেন। তবে এনসিপিকে একটি বৃহৎ জুলাই আমব্রেলা হিসেবে স্বতন্ত্রভাবে দাঁড় করানোর চেষ্টা সফল হয়নি বলেও উল্লেখ করেন।এনসিপিতে না যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে মাহফুজ আলম বলেন, “ঢাকার কোনো একটি আসনে জামায়াত-এনসিপি জোটের প্রার্থী হওয়ার চাইতে আমার লং স্ট্যান্ডিং পজিশন ধরে রাখা অধিক গুরুত্বপূর্ণ।” আরও পড়ুন: জামায়াত নেতৃত্বাধীন জোটে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেন নাহিদ ইসলামতিনি স্পষ্ট করে জানান, তাকে জামায়াত-এনসিপি জোট থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়নি—এমন বক্তব্য সত্য নয়। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে ‘শীতল যুদ্ধের সময়’ উল্লেখ করে মাহফুজ আলম বলেন, “এই পর্বে কোনো পক্ষ না নিয়ে নিজেদের বক্তব্য ও নীতিতে অটল থাকাই শ্রেয়।”পোস্টের শেষাংশে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “নূতন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক বন্দোবস্ত সম্ভব ও বাস্তব। বিকল্প ও মধ্যপন্থী তরুণ/ জুলাই শক্তির উত্থান অত্যাসন্ন।”তিনি জানান, ভবিষ্যতেও রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সব মাধ্যমে নিজের অবস্থান ধরে রাখবেন এবং এই পথে যারা যুক্ত হতে চান, তাদের জন্য দরজা খোলা। ওদিকে জামায়াতের নেতৃত্বে জোটে যাওয়া নিয়ে এনসিপিতে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। দলের এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারাসহ বেশ কয়েকজন নেতা দল ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। দশ দলীয় জোটে কারা:বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), নেজামে ইসলাম পার্টি বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি), জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)।