খুলনায় হঠাৎ করেই বেড়েছে শীতের তীব্রতা। ভোর থেকে রাত সব সময়ই শীতের কনকনে হাওয়ায় কাঁপছে নগরবাসী।রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সারাদিন দেখা মেলেনি সুর্যের, সেই সঙ্গে ছিল বাতাস। এদিন খুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র ঠান্ডা থেকে বাঁচতে গরম কাপড়ের খোঁজে মানুষের ভিড় বাড়ছে নগরীর বিভিন্ন বিপণি ও ফুটপাথের দোকানগুলোতে। তবে শপিং মলের তুলনায় ফুটপাথে পুরোনো গরম কাপড়ের দোকানেই বেশি ভিড় দেখা যাচ্ছে। এসব দোকানের ক্রেতাদের বড় অংশই মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ।পৌষ মাসের মাঝামাঝি সময়ে এসে খুলনায় শীত যেন আরও জাঁকিয়ে বসেছে। কয়েকদিন ধরেই রাত ও ভোরে কুয়াশা আর ঠান্ডার দাপটে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে।নগরীর ডাকবাংলো মোড়, হার্ডমেটাল এলাকা, ক্লে রোড মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ফুটপাথ, ভ্যান ও অস্থায়ী দোকানে শীতবস্ত্র বিক্রি করছেন। সোয়েটার, জ্যাকেট, হুডি, মাফলারসহ নারী ও শিশুদের নানা ধরনের গরম কাপড়ে ভরে উঠেছে এসব এলাকা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতা আর বিক্রেতার হাঁকডাকে জমজমাট পরিবেশ বিরাজ করছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, গত বছরের তুলনায় এবার শীতবস্ত্রের দাম বেশ চড়া।আরও পড়ুন: গলদা-বাগদা সংরক্ষণে জোর দিয়ে পরিকল্পিত উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান মৎস্য উপদেষ্টাররূপসা এলাকা থেকে গরম কাপড় কিনতে এসেছিলেন রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, অনেক দোকান ঘুরেও পছন্দের জ্যাকেটের দাম নাগালের মধ্যে পাচ্ছেন না। এক দোকানে পুরোনো জ্যাকেটের দাম নতুন কাপড়ের চেয়েও বেশি হওয়ায় তিনি শেষ পর্যন্ত না কিনেই ফিরে যান।সোনাডাঙ্গার বাসিন্দা আল-আমিন অভিযোগ করে বলেন, `জব্বার মার্কেটকে গরীব মানুষের মার্কেট বলা হয়। কিন্তু এবার সেখানে দাম শুনে অবাক হয়েছি। ৭-৮শ টাকার জ্যাকেটের দাম হাঁকা হচ্ছে প্রায় দুই হাজার টাকা। এই দামে আমাদের মতো মানুষের পক্ষে কেনা কঠিন।'অন্যদিকে জব্বার মার্কেটের এক ব্যবসায়ী রেজাউল করিম জানান, হঠাৎ করে শীত বাড়ায় বিক্রি অনেক বেড়েছে। তিনি বলেন, `আগে যা বিক্রি হতো, এখন তার প্রায় দ্বিগুণ বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে প্যাডিং জ্যাকেটের চাহিদা বেশি। মোটরসাইকেল চালান এমন তরুণদের ভিড় বেশি দেখা যাচ্ছে।' তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে বেলের দাম বাড়ায় শীতবস্ত্রের দামও তুলনামূলক বেশি পড়ছে।আরও পড়ুন: টানা ছুটিতে সুন্দরবন ও ষাটগম্বুজ মসজিদে পর্যটকের ঢলএদিকে জব্বার মার্কেটের তুলনায় কম দামে শীতবস্ত্র পাওয়া যাওয়ায় ফুটপাথের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের চাপ বেশি। মানভেদে বড়দের গরম কাপড় ৩০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। শিশুদের শীতবস্ত্র মিলছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এসব ফুটপাথের দোকানই এখন প্রধান ভরসা হয়ে উঠেছে। অনেকেই পরিবারের একাধিক সদস্যের জন্য একসঙ্গে শীতবস্ত্র কিনছেন এসব দোকান থেকেই।