মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের বিষয়ে ফ্লোরিডায় অনুষ্ঠিত আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু ট্রাম্প এটা স্বীকার করেছেন যে, ভূখণ্ডের ইস্যুতে কিছু ‘অমীমাংসিত’ বিষয় রয়ে গেছে। খবর বিবিসির। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেন উভয়ই এই আলোচনাকে ‘দুর্দান্ত’ হিসাবে বর্ণনা করলেও ট্রাম্প বলেছেন যে, এক বা দুটি জটিল ইস্যু বিশেষ করে ভূমি ইস্যুতে কিছু ‘অমীমাংসিত’ বিষয় রয়ে গেছে। এদিকে মার-এ-লাগোতে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রেখে জেলেনস্কি বলেন, তারা ২০-দফা শান্তি পরিকল্পনার ৯০ শতাংশ বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছেন। অন্যদিকে ট্রাম্প বলেছেন, ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা গ্যারান্টি প্রায় ৯৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। জেলেনস্কি পরে বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার প্রায় চার বছরের যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে আরও আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনীয় দল আগামী সপ্তাহে সাক্ষাৎ করবে। টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে এক বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেন, আমরা সকল বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছি এবং গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেন ও আমেরিকান দল যে অগ্রগতি করেছে তা অত্যন্ত মূল্যবান বলে মনে করি। রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করে এবং মস্কো বর্তমানে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের প্রায় ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলকে একটি সামরিক নিরস্ত্রীকৃত অঞ্চলে পরিণত করার প্রস্তাব এখনো ‘অমীমাংসিত’ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ওই ভূমির কিছু অংশ দখল করা হয়েছে এবং কিছু অংশ হয়তো দখলের জন্য প্রস্তুত। তবে পরবর্তী কয়েক মাসের মধ্যে তা হয়তো দখল করা হতে পারে। মস্কো বর্তমানে দোনেৎস্ক অঞ্চলের প্রায় ৭৫ শতাংশ এবং পার্শ্ববর্তী লুহানস্কের প্রায় ৯৯ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। এই অঞ্চলগুলো সম্মিলিতভাবে ডনবাস নামে পরিচিত। রাশিয়া চায় ইউক্রেন ডনবাসে এখনো যে ক্ষুদ্র অংশ নিয়ন্ত্রণ করে তা থেকে সরে যাক, অন্যদিকে কিয়েভ জোর দিয়ে বলেছে যে এই অঞ্চলটি ইউক্রেনীয়দের নিয়ন্ত্রণে থাকা একটি মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিণত হতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারবার ইউক্রেনের হারানো অঞ্চল সম্পর্কে তার নিজস্ব অবস্থান পরিবর্তন করেছেন এবং সেপ্টেম্বরে পর্যবেক্ষকদের হতবাক করে দিয়ে তিনি বলেছিলেন যে, ইউক্রেন হয়তো এটি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবে। ভবিষ্যতের আক্রমণ থেকে ইউক্রেনকে রক্ষা করার জন্য লজিস্টিক সহায়তা বা সৈন্য মোতায়েনের আনুষ্ঠানিক প্রতিশ্রুতি না দিয়েই ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ‘৯৫ শতাংশ সম্পন্ন’ হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় আলোচনার সম্ভাবনাও তুলে ধরে বলেছেন এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প বলেছেন, এটি ‘সঠিক সময়ে’ হতে পারে। টিটিএন