তীব্র শীত: চুয়াডাঙ্গায় জনজীবন বিপর্যস্ত

হিম শীতল ঠান্ডা বাতাস, কুয়াশা আর মেঘাচ্ছন্ন আকাশের কারণে চুয়াডাঙ্গায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে জনজীবনে। জেলায় সূর্যের দেখা নেই। অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষগুলো শীতের তীব্রতার কাছে এক রকম অসহায় হয়ে পড়েছে।সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, উত্তরের হিম শীতল ঠান্ডা বাতাস, ঘন কুয়াশা আর মেঘাচ্ছন্ন আকাশের কারণে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে জনজীবনে। দিনের বেলা সূর্যের দেখা না পাওয়ায় শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। সোমবার সকাল ৬টায় তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয় ১২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের তীব্রতার কারণে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে।এদিকে, তীব্র শীতের কারণে খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষগুলো চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। শীতের কারণে সড়কে মানুষের উপস্থিতিও কম। খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতা নেয়ার চেষ্টা করছে সাধারণ মানুষ। খেটে খাওয়া মানুষগুলো কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তাদের কাজ না থাকায় বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।বৈরী আবহাওয়ার কারণে বীজতলা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ব্যাহত হতে পারে ধান চাষ। হাসপাতালগুলোতে বাড়তে শুরু করেছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। শয্যার তুলনায় কয়েক গুণ রোগী বেশি ভর্তি থাকায় বারান্দা এবং মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে তাদের। ডায়রিয়া নিউমোনিয়া শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা।আরও পড়ুন: ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত প্রাণ-প্রকৃতি, এ পরিস্থিতি থাকবে কতদিন?চুয়াডাঙ্গা হাতিকাটা গ্রামের ইজিবাইক চালক নুর ইসলাম বলেন, ‘সকালে গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরও এখনো পর্যন্ত ভাড়া হয়নি। সড়কে মানুষ না থাকায় ভাড়া হচ্ছে না। একদিকে শীত, অন্যদিকে পেটের তাগিদ। শীতের সঙ্গে জীবন জীবিকার যুদ্ধে হেরে যাচ্ছি আমরা।’আব্দুল হালিম নামে এক পথচারী জানান, অতিরিক্ত শীতের কারণে শরীরে ছয়টি পোশাক পরেও শীত ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না। শীত শরীরে সঞ্চারিত হচ্ছে। শরীরের কোনো অংশ ফাঁকা থাকলে অবশ হয়ে যাচ্ছে। পৌষ মাসের শুরু থেকে জেলায় শীত প্রভাব বিস্তার করছে।ভ্যানচালক বৃদ্ধ হাসমত আলি বলেন, ‘ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এখনো বসে আছি। গরম চা খাচ্ছি। আমাদের মতো গরীব মানুষ পর্যাপ্ত শীতের গরম কাপড় না থাকায় এক রকম মানবেতর জীবনযাপন করছি। এখনো পর্যন্ত কোন কম্বল পাইনি।’চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক আলতাফ হোসেন জানান, আকাশ মেঘলা কুয়াশাচ্ছন্ন আর উত্তরের হিমেল বাতাসের কারণে শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি। শীতের দাপট আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকবে জেলায়। তাপমাত্রা আরও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজকেও সূর্যের দেখা নাও মিলতে পারে।