বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ঢাকা ক্যাপিটালসকে মৌসুমের প্রথম ম্যাচে জয় এনে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন ইমাদ ওয়াসিম। রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে দলের জয়ে দারুণ ভূমিকা রাখার পরদিনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুঃসংবাদ দিয়েছেন এই পাকিস্তানি অলরাউন্ডার। স্ত্রী শানিয়া আশফাকের সঙ্গে দীর্ঘ ৬ বছরের দাম্পত্যের ইতি টানছেন ইমাদ।গতকাল ইনস্টাগ্রামে এক আবেগঘন বার্তায় ৩৭ বছর বয়সী ইমাদ জানান, স্ত্রী শানিয়ার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেছেন তিনি। এই বার্তায় তিনি লিখেছেন, ছয় বছরের দাম্পত্য জীবনের পর বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করা ছিল তার জন্য একটি অত্যন্ত কঠিন সিদ্ধান্ত। তিনি আরও লিখেছেন, তাদের মধ্যে বারবার এমন সব দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে, যা আর মীমাংসা করা সম্ভব হয়নি। ইমাদ জনসাধারণকে তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সম্মান করার আহ্বান জানান এবং একসঙ্গে তোলা পুরোনো ছবি শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে বলেন। তিনি বিশেষভাবে অনুরোধ করেন, ভবিষ্যতে যেন শানিয়াকে তার স্ত্রী হিসেবে উল্লেখ না করা হয়।এর পাশাপাশি পাকিস্তান জাতীয় দলের সাবেক এই অলরাউন্ডার সতর্ক করে দেন, বিচ্ছেদ নিয়ে কোনো ধরনের জল্পনা বা মানহানিকর বক্তব্যে বিশ্বাস না করতে; প্রয়োজনে এসব বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান। তিনি তার বক্তব্যের শেষে সন্তানদের প্রতি নিজের দায়িত্বের কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, তিনি একজন দায়িত্বশীল বাবা হিসেবেই থাকবেন।ইমাদের ঘোষণার পর থেকেই সংসার ভাঙার নেপথ্যের কারণ নিয়ে জল্পনা চলছিল। সন্দেহ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে শানিয়ার চাঞ্চল্যকর মন্তব্য। ইমাদের সদ্য সাবেক হওয়া স্ত্রীর দাবি, পাকিস্তান জাতীয় দলের অবসরপ্রাপ্ত এই ক্রিকেটারের সঙ্গে তার বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পেছনে ‘তৃতীয় কোনো ব্যক্তি’র সম্পৃক্ততা ছিল। এই মন্তব্যটি আসে দম্পতির বিচ্ছেদের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার অল্প সময় পরেই। আরও পড়ুন: দক্ষিণ আফ্রিকা বোর্ডের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে শামসির জয়ইমাদের ঘোষণার পর শানিয়া আশফাকও ইনস্টাগ্রামে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। তিনি বিচ্ছেদের কারণে নিজের কষ্টের কথা জানান এবং বিশেষ করে তাদের সন্তানদের ওপর এর প্রভাবের কথা উল্লেখ করেন। তিনি তাদের পাঁচ মাস বয়সী সন্তানের কথা তুলে ধরেন, যাকে এখনো তার বাবা কোলে নেননি। শানিয়া জানান, দাম্পত্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে তিনি অনেক চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, 'অনেক দাম্পত্য জীবনের মতো আমাদের সম্পর্কেও সমস্যা ছিল, তবুও তা টিকে ছিল।' তবে শেষ পর্যন্ত তৃতীয় একজনের সম্পৃক্ততাই তাদের আগে থেকেই দুর্বল হয়ে পড়া সম্পর্কের জন্য চূড়ান্ত আঘাত হয়ে আসে বলে তিনি দাবি করেন।২০১৯ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ইমাদ-শানিয়া জুটি। ছয় বছরের সংসারে তাদের আছে তিনটি সন্তান। এই বিচ্ছেদ পারিবারিক সম্পর্ক ও সন্তানদের কল্যাণ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে। তবে ইমাদ ও শানিয়া—উভয়েই সহ-অভিভাবকত্ব ও সন্তানদের প্রতি দায়িত্ব পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।ইমাদ তার বিবৃতিতে আশ্বস্ত করেন যে তিনি সন্তানদের সম্পূর্ণ ও দায়িত্বশীলভাবে দেখভাল করে যাবেন। অন্যদিকে শানিয়ার বক্তব্যে এই কঠিন সময়ে সন্তানদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি তার গভীর উদ্বেগ ফুটে ওঠে। ব্যক্তিগত মতবিরোধ সত্ত্বেও সন্তানদের জন্য একটি স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত করাই যে তাদের অগ্রাধিকার, তা দুজনের বক্তব্যেই স্পষ্ট।ইমাদ এবং শানিয়া যখন তাদের বিচ্ছেদের ঝক্কি সামলাচ্ছেন, তখন জনমনে এই বিষয়টি নিয়ে আগ্রহ থাকবেই। তবে তাদের উভয়ের বক্তব্যেই গোপনীয়তা ও সম্মান বজায় রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে। ইমাদ আইনি পদক্ষেপের ইঙ্গিত দেওয়ায় পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়, তা এখনো দেখার বিষয়। শানিয়ার উল্লেখ করা তৃতীয় পক্ষের সম্পৃক্ততা পুরো ঘটনাকে আরও জটিল করে তুলেছে, আর উভয় পক্ষই জল্পনা-কল্পনার জবাবে স্পষ্ট অবস্থান নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে মনে হচ্ছে।