পৌষের মাঝামাঝিতে মৌলভীবাজারে জেঁকে বসেছে হাড়কাঁপানো শীত। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন জেলার ৯২টি চা বাগানের শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। তীব্র শীত উপেক্ষা করেই পেটের দায়ে কাজে বের হতে হচ্ছে তাদের। শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রোববার (২৯ ডিসেম্বর) মৌলভীবাজারে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল শনিবার যা ছিল ১৩.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। টানা কয়েকদিন সূর্যের দেখা না মেলায় এবং ঘন কুয়াশা থাকায় শীতের তীব্রতা অনেক বেশি অনুভূত হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তীব্র শীত উপেক্ষা করে সকালে কাজে যেতে হচ্ছে চা শ্রমিকদের। তবে শ্রমিকদের পর্যাপ্ত গরম কাপড় না থাকায় শীতের মধ্যে কষ্ট করে কাজ করছেন। এছাড়া বেশি বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর, রিকশাচালক, নির্মাণশ্রমিক ও খেটে খাওয়া মানুষ, যাদের বেশির ভাগকেই খোলা আকাশের নিচে কাজ করতে হয়। চা শ্রমিকেরা জানান, তীব্র শীতের সময় আমরা কাজ করতে হয়। আমাদের কারও পর্যাপ্ত গরম কাপড় নেই। রাতে ঠান্ডার জন্য ঘুমাতে পারি না। অনেক কষ্ট করে জীবনের এই সময়টা কাটাতে হয়। দিনমজুর সমুজ মিয়া বলেন, কিছুদিন ধরে শীত বেড়েছে। দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশা থাকে। এর পরেও কাজে যেতে হচ্ছে। একদিন কাজে না গেলে পরিবারের সদস্যরা অনাহারে থাকতে হবে। এই জন্য বাধ্য হয়ে শীত উপেক্ষা করে কাজে যেতে হচ্ছে। এদিকে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা জনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে জ্বর সর্দ্দী, কাশি ও ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বয়স্করা। অনেকেই চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কেউ প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নিয়ে বাড়িতে ফিরছেন। মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মো. মামুনুর রহমান বলেন, শীতের মধ্যে সবাইকে পর্যাপ্ত গরম কাপড় পড়তে হবে। বিশেষ করে এই সময়ে শিশু ও বৃদ্ধদের বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে। তাদেরকে বেশি করে গরম কাপড় পরিধান করে রাখতে হবে। শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, কয়েক দিন ধরেই এই অঞ্চলে শীতের দাপট রয়েছে। বিশেষ করে রাতে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। আরও কয়েকদিন একই রকম তাপমাত্রা থাকবে। কেএইচকে/এএসএম