তাইওয়ান ঘিরে ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামে ব্যাপক আকারে লাইভ-ফায়ার সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। এতে প্রধান বন্দর অবরোধ, সমুদ্রের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা এবং আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ প্রতিহতের অনুশীলন করা হচ্ছে। তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির প্রতি কঠোর সতর্কবার্তা দিতে এ মহড়া চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে বেইজিং। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে নৌ, বিমান ও রকেট বাহিনী মোতায়েন করে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে চীনের শাসক কমিউনিস্ট পার্টির সামরিক শাখা পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। একই সঙ্গে চীনা কোস্টগার্ড জাহাজগুলো তাইওয়ানের আশপাশের দ্বীপ এলাকায় আইন প্রয়োগমূলক পরিদর্শন চালাচ্ছে। মহড়ার অংশ হিসেবে ডেস্ট্রয়ার, ফ্রিগেট, যুদ্ধবিমান, বোমারু বিমান, ড্রোন ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছে। পিএলএ জানিয়েছে, এতে সমুদ্র-আকাশ সমন্বয়, নির্ভুল লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত ও ধ্বংসের সক্ষমতা পরীক্ষা করা হচ্ছে যার মধ্যে সাবমেরিন বিরোধী হামলাও রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই মহড়াকে পিএলএর পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ডের মুখপাত্র কর্নেল শিই বলেছেন, এটি তাইওয়ান স্বাধীনতার বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি এবং বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কতা। চীনের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় ঐক্য রক্ষায় এটি একটি বৈধ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই মহড়াকে উত্তেজনা বাড়ানোর পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তাদের দাবি, আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা ক্ষুণ্ন করছে বেইজিং। জবাবে তাইওয়ানও উপযুক্ত বাহিনী মোতায়েন করে পাল্টা যুদ্ধ প্রস্তুতিমূলক মহড়া চালাচ্ছে। তাইওয়ানের কোস্টগার্ড জানিয়েছে, এই মহড়ার পরিসর দেশটির জলসীমায় জাহাজ চলাচল এবং জেলেদের স্বাভাবিক কার্যক্রমের জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি করছে। চীন দাবি করেছে, তাইওয়ান তাদের একটি প্রদেশ এবং একে পুনর্দখলের প্রস্তুতি নিচ্ছে। মার্কিন গোয়েন্দা সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যে তাইওয়ানে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে চীন ব্যাপক সামরিক আধুনিকায়ন চালাচ্ছে। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও কমিউনিস্ট পার্টি তাইওয়ানকে শান্তিপূর্ণ পুনরেকত্রীকরণে রাজি করানোর আহ্বান জানালেও তাইওয়ানের জনগণ ও সংসদের বড় অংশ বেইজিংয়ের শাসন প্রত্যাখ্যান করছে। এর জবাবে তাইওয়ান নিজস্ব সামরিক প্রতিরক্ষা জোরদার করছে। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান কেএম