প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স অ্যাম্বাসেডর ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন বিদায়ী সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথিশালা যমুনায় তাদের মধ্যে সাক্ষাতের পর বৈঠক হয়।এ সময় ইউনুস ও জ্যাকবসন আসন্ন ফেব্রুয়ারির সংসদ নির্বাচন ও গণভোট, বাণিজ্য, বেসামরিক বিমান চলাচল, অন্তর্বর্তী সরকারের নেয়া শ্রম সংস্কার এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।বাংলাদেশে ঘটনাবহুল এক বছর অতিবাহিত করে নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছেন জ্যাকবসন। তিনি গত ১৭ মাসে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।এ সময় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে সরকারের অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট সফলভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত।’আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনারের সাক্ষাৎতিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে শান্তি বিঘ্নিত করার যেকোনো চেষ্টা কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে।’মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স অন্তর্বর্তী সরকারের নেয়া সংস্কারের প্রশংসা করেন এবং বিশেষভাবে ‘অসাধারণ ও ব্যতিক্রমী’ শ্রম আইনকে উল্লেখ করে বলেন, ‘এটি বাংলাদেশে আরও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়ক হবে।’তিনি আরও জানান, ‘পূর্ববর্তী সরকারের আমলে শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৪৬ মামলার মধ্যে ৪৫টি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্তের জন্য তিনি সরকারের প্রশংসা করেন।’জবাবে প্রধান উপদেষ্টা নতুন শ্রম অধ্যাদেশকে ‘অত্যন্ত চমৎকার আইন’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, দেশের শীর্ষ শ্রম নেতারাও এই সংস্কার এবং অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কনভেনশন অনুমোদনকে স্বাগত জানিয়েছেন।আরও পড়ুন: দেশে ফিরেই প্রধান উপদেষ্টাকে তারেক রহমানের ফোন, জানালেন ধন্যবাদসাক্ষাতে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার অর্থায়ন নিয়েও আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ধারাবাহিক সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান।‘যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের শিবিরগুলোতে বসবাসরত দশ লক্ষাধিক জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য জীবনরক্ষামূলক মানবিক সহায়তার একক বৃহত্তম দাতা’, উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনুস আশা প্রকাশ করেন যে ভবিষ্যতেও এ সহায়তা অব্যাহত থাকবে।প্রধান উপদেষ্টা অ্যাম্বাসেডর জ্যাকবসনকে বাংলাদেশে তার এক বছরের মেয়াদকালীন ‘গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’ ও ‘বাংলাদেশের বন্ধু’ হিসেবে কাজ করার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।সাক্ষাতের সময় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং এসডিজি সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন।