ধেয়ে আসছে শৈত্যপ্রবাহ ‘কনকন’, কোন জেলায় শীত কেমন অনুভূত হবে

বিদায়ী বছরের শেষ লগ্নে এসে প্রকৃতি যেন তার আসল রূপ দেখাতে শুরু করেছে। হাড়কাঁপানো শীত আর কনকনে হিমেল হাওয়ার বার্তা নিয়ে দেশের ওপর আছড়ে পড়তে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ, যার নাম দেয়া হয়েছে ‘কনকন’।রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি)-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।প্রতিবেদনে বলা হয়, শৈত্যপ্রবাহ কনকন দেশের সব জেলাকে স্পর্শ করবে না, তবে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের জনপদে শৈত্যপ্রবাহের তীব্র কামড় অনুভূত হবে। অর্থাৎ দেশের অন্তত তিন-চতুর্থাংশ এলাকা এই ‘কনকন’-এর কবলে পড়তে যাচ্ছে।সময়সূচি ও সক্রিয়তাশৈত্যপ্রবাহ ‘কনকন’-এর প্রভাব মূলত ২৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে চলবে আগামী ৭ জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত। তবে এর সবচেয়ে ভয়াবহ বা অধিক সক্রিয় রূপ দেখা যাবে ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৭ জানুয়ারির মধ্যে। অর্থাৎ, নতুন বছরের শুরুটা হবে কনকনে শীতের মধ্য দিয়ে।কোথায় কেমন শীত? (অঞ্চলভিত্তিক পূর্বাভাস)সর্বাধিক সক্রিয়: রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অধিকাংশ এলাকায় এই শৈত্যপ্রবাহের তাণ্ডব সবচেয়ে বেশি থাকবে।বেশ সক্রিয়: রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগসহ গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, কুমিল্লা ও চাঁদপুর অঞ্চলে শীতের তীব্রতা থাকবে প্রবল।কম সক্রিয়: বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু এলাকা এই তালিকায় থাকলেও দেশের উপকূলীয় অঞ্চল, ঢাকা শহর এবং পার্বত্য জেলাগুলোতে (কক্সবাজার, বান্দরবান) সরাসরি কোনো শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। আরও পড়ুন: শৈত্যপ্রবাহ কী, কেন হয়?পারদ নামবে যেখানেশৈত্যপ্রবাহ চলাকালীন সময়ে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, রাজশাহী, নওগাঁ, যশোরসহ এর পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা +৬ থেকে +৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যেতে পারে। এসব এলাকায় শীতের প্রভাব আগে শুরু হবে। অন্যদিকে রংপুর ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে তাপমাত্রা +৭ থেকে +৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকতে পারে। খুলনা, বরিশাল ও সিলেটের কিছু এলাকায় পারদ +৯ থেকে +১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।কুয়াশাবেল্ট ও বৃষ্টিহীন আকাশশৈত্যপ্রবাহ শুরুর প্রথম ২-৩ দিন দেশজুড়ে ‘কুয়াশাবেল্ট’ বা ঘন কুয়াশার দাপট থাকবে। এর ফলে সড়ক ও নৌ-যোগাযোগ বিঘ্নিত হতে পারে। তবে এরপর কুয়াশা কিছুটা হ্রাস পেয়ে দিনের বেলা রোদের দেখা মিলতে পারে। সবচেয়ে স্বস্তির খবর হলো, এই পুরো সময়ে দেশের কোথাও কোনো বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই, ফলে আকাশ থাকবে মূলত শুষ্ক।ঢাকা ও উপকূলীয় অঞ্চলের অবস্থাপ্রযুক্তিগত বা খাতা-কলমের হিসাবে ঢাকা শহর ও উপকূলীয় এলাকায় শৈত্যপ্রবাহের তকমা না লাগলেও, এসব এলাকায় তাপমাত্রা +১০ থেকে +১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করবে। ফলে শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও হাড়কাঁপানো শীতের অনুভূতি থেকে রেহাই পাচ্ছেন না রাজধানীবাসী। আরও পড়ুন: শীতকালে গিজার বিস্ফোরণের ৫ কারণবিশেষ সতর্কতাশৈত্যপ্রবাহ ‘কনকন’-এর প্রভাবে তীব্র ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়তে পারে। বিশেষ করে নদী অববাহিকায় রাতে ও ভোরে দৃষ্টিসীমা কমে আসবে। প্রাকৃতিক কারণে এই শৈত্যপ্রবাহের তীব্রতা বা সময়সূচিতে সামান্য পরিবর্তন হতে পারে বলে প্রতিবেদনে নোট দেয়া হয়েছে। শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য বাড়তি সতর্কতা এবং মহাসড়কে চালকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।