অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের মধ্যকার বক্সিং ডে অ্যাশেজ টেস্টে ব্যবহৃত মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের (এমসিজি) উইকেটকে ‘অসন্তোষজনক’ হিসেবে রেটিং দিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। ম্যাচ রেফারি জেফ ক্রো এ রায় দিয়েছেন। এর ফলে এমসিজির নামে যুক্ত হয়েছে একটি ডিমেরিট পয়েন্ট। আইসিসির চার স্তরের পিচ রেটিং ব্যবস্থায় ‘অসন্তোষজনক’ তৃতীয় ধাপের রেটিং। এই শ্রেণির পিচ এমন বলে বিবেচিত হয়, যেখানে ব্যাট ও বলের মধ্যে ভারসাম্য থাকে না এবং অতিরিক্তভাবে বোলারদের সহায়তা করে। আশ্চর্যের বিষয়, এর আগের টানা তিনটি বক্সিং ডে টেস্টেই এমসিজির উইকেট পেয়েছিল সর্বোচ্চ ‘ভেরি গুড’ রেটিং। দু’দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাওয়া এই টেস্টে প্রথম দিনে পড়ে ২০টি উইকেট, দ্বিতীয় দিনে আরও ১৬টি। পুরো ম্যাচে কোনো ব্যাটারই হাফ-সেঞ্চুরি করতে পারেননি। এসব কারণ উল্লেখ করে ম্যাচ রেফারি জেফ ক্রো বলেন, ‘উইকেটটি বোলারদের জন্য অতিরিক্ত সহায়ক ছিল। আইসিসির নির্দেশিকা অনুযায়ী এটি ‘অসন্তোষজনক’, তাই ভেন্যুটি একটি ডিমেরিট পয়েন্ট পেয়েছে।’ ম্যাচটি দ্রুত শেষ হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। সংস্থাটির প্রধান ক্রিকেট কর্মকর্তা জেমস অ্যালসপ বলেন, ‘তৃতীয় ও চতুর্থ দিনের টিকিট কাটা দর্শক এবং বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমীর জন্য আমরা হতাশ। এমসিজির উইকেট সাধারণত ব্যাট ও বলের মধ্যে যে ভারসাম্য দেয়, এবার তা পাওয়া যায়নি।’ তিনি অবশ্য এমসিসির গ্রাউন্ড স্টাফদের কাজের প্রশংসা করে বলেন, আগামী বছরের নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বক্সিং ডে টেস্ট এবং ২০২৭ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫০ বছর পূর্তি টেস্টে মানসম্মত উইকেট উপহার দেওয়ার বিষয়ে তারা আশাবাদী। ম্যাচ শেষের একদিন পর এমসিজির কিউরেটর ম্যাট পেজ জানান, তিনি ‘ভিষণভাবে হতবাক’। তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উইকেটে ১০ মিলিমিটার ঘাস রাখা হয়েছিল, কারণ শেষ তিনদিনের জন্য তীব্র গরমের পূর্বাভাস ছিল। তবে সে সিদ্ধান্ত নিয়েই এখন সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন উঠছে। গত মৌসুমে ভারতের বিপক্ষে ৭ মিলিমিটার ঘাস রেখে পাঁচদিন পর্যন্ত গড়ানো একটি টেস্ট হয়েছিল। এই দু’দিনের টেস্টের কারণে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার আর্থিক ক্ষতি হতে পারে প্রায় ১ কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলার, যা আগের টেস্টের ক্ষতির সঙ্গে যোগ হবে। ১২৯ বছরে প্রথমবার একটি অ্যাশেজ সিরিজে দুটি টেস্ট দুই দিনের মধ্যে শেষ হওয়ায়, কিউরেটরদের কাজে বোর্ডের হস্তক্ষেপ বাড়ানো উচিত কি না— সে প্রশ্নও তুলেছেন সিএর প্রধান নির্বাহী টড গ্রিনবার্গ। তবে অস্ট্রেলিয়ার কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড এ বিষয়ে ভিন্নমত দিয়েছেন। তিনি কিউরেটর ম্যাট পেজের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘আমি চাই না নির্দিষ্ট ধরনের উইকেট বানানোর নির্দেশ দেওয়া হোক। অস্ট্রেলিয়া কখনোই সেই পথে যায়নি। এমন ঘটনা কখনো কখনো ঘটতে পারে। আমরা তার কাজে আস্থা রাখি।’ ম্যাকডোনাল্ড আরও বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে এমসিজিতে ব্যাট ও বলের সুন্দর ভারসাম্য বজায় রাখা হয়েছে। ‘আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের ব্যাটিং দল এর চেয়ে ভালো পারফর্ম করতে পারে। তবে ওই ম্যাচে যা হয়েছে, তা অন্য কথা বলছে,’- যোগ করেন তিনি। আইএইচএস/