নোয়াখালীকে হ্যাটট্রিক হারের লজ্জায় ডুবিয়ে সহজ জয় তুলে নিলো রাজশাহী

প্রথমবার বিপিএলে অংশ নিয়ে শুরুটা ভালো করতে পারেনি নোয়াখালী এক্সপ্রেস। নিজেদের তৃতীয় ম্যাচেও হারের বৃত্ত থেকে বের হতে পারলো না দলটি। আগে ব্যাট করতে নেমে কোনোমতে ১২৪ রান তোল তারা। জবাব দিতে নেমে ১৩ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। আর তাতেই টানা তৃতীয় হারের স্বাদ পেলো নোয়াখালী এক্সপ্রেস।ব্যর্থতা যেনো আষ্টেপৃষ্ঠে চেপে ধরেছে নোয়াখালীকে। চট্টগ্রাম রয়্যালসের বিপক্ষে হেরে বিপিএলের এবারের আসর শুরু করেছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। পরের ম্যাচে অবশ্য সিলেট টাইটান্সের সঙ্গে লড়াই হয়েছিল হাড্ডাহাড্ডি। তবে শেষ পর্যন্ত হারতে হয় তাদের। তৃতীয় ম্যাচে রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে তো কোনো পাত্তাই পেলো না নোয়াখালী।  রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল নোয়াখালী এক্সপ্রেস। পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেট হারিয়ে ৪২ রান তোলে তারা। কিন্তু এরপরই শুরু হয় তাদের ব্যাটিং ব্যর্থতা। একশ’র আগেই হারায় ৫ উইকেট, পরের ৩ রান যোগ করতে হারায় আরও দুই উইকেট। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে একাই লড়াই চালিয়েছেন অধিনায়ক হায়দার আলী। তার ৩৩ ও শেষদিকে মেহেদী হাসান রানা দুই বাউন্ডারিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২৪ রানের পুঁজি পায় নোয়াখালী এক্সপ্রেস।  জবাব দিতে নেমে রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের শুরুটা ভালো হয়নি। স্কোরবোর্ডে ২ রান যোগ হতেই শাহিবজাদা ফারহানের উইকেট হারা। এরপর অবশ্য ঘুরে দাঁড়াতে সময় নেয়নি রাজশাহী। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে ৩৮ বলে ৬৫ রানের জুটি গড়েন তানজিদ হাসান তামিম।  দলীয় ৬৭ রানে ফেরেন শান্ত, ২০ বলে ২৪ রান করা বাঁহাতি এই ব্যাটারকে হাসান মাহমুদের ক্যাচ বানান রাজা। তারপর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তামিমও। ২০ বলে ২৯ রান করে ফেরেন জহির খানের বলে বোল্ড হয়ে। হুসেইন তালাতও ফিরেছেন দ্রুতই। ৯ বলে ৩ রান করে ফেরেন হাসান মাহমুদের বলে মাজ সাদাকাতের হাতে ক্যাচ দিয়ে।  আরও পড়ুন: কাগজে-কলমে রংপুর সেরা দল, হারের পর চট্টগ্রাম কোচের স্বীকারোক্তি এরপর আর কোনো বিপদ ঘটতে দেননি মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলী রাব্বি। দুজনে মিলে ৫১ রানের জুটি গড়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। মুশফিক অপরাজিত থাকেন ৩০ বলে ২৮ রানে, আর ইয়াসির অপরাজিত থাকেন ২৬ বলে ২৩ রানে। নোয়াখালীর হয়ে হাসান মাহমুদ নেন ২টি উইকেট। রাজা ও জহির খান নেন ১টি করে উইকেট।   এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে ভালো কিছুরই আভাস দিয়েছিলেন নোয়াখালীর দুই ওপেনার হাবিবুর রহমান সোহান ও মাজ সাদাকাত। তবে স্কোরবোর্ডে ১৮ রান যোগ হতেই সোহানকে হারায় নোয়াখালী। ৬ বলে ৫ রান করা এই ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরান বিনোরা ফার্নান্দো।  সাব্বির হোসেন এগোচ্ছিলেন অনেকটা কচ্ছপ গতিতে। রিপন মণ্ডলের বলে মোহাম্মদ নাওয়াজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১১ বলে মাত্র ৬ রান। এর কিছুক্ষণ পর বিদায় নেন মাজ সাদাকাত। ১৯ বলে ২৫ রান করা এই ব্যাটারকে শান্তর ক্যাচ বানান হোসেইন তালাত।  মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনও খেলছিলেন অনেকটা ধীরগতিতেই। ২৭ বল খেলে এক ছক্কা ছাড়া নেই আর কোনো বাউন্ডারি। শেষ পর্যন্ত ২২ রান করে তানজিম হাসান সাকিবের বলে নাওয়াজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অঙ্কন।  আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছক্কা মারা ক্রিকেটার রাজশাহীতে আগের ম্যাচে ২৯ রান করা জাকের আলী এদিন ছিলেন ব্যর্থ। ৮ বল খেলে মাত্র ৬ রান করেই বিদায় নেন এই ব্যাটার। তানজিম সাকিবের বল মারতে গিয়ে হাসান মুরাদের হাতে ক্যাচ দেন জাকের।  রাফিউর রহমান রাজা ফিরেছেন ৪ বলে ১ রান করে। রিপন মণ্ডলের বলে সরাসরি বোল্ড আউট ফেরেন এই ব্যাটার। একই ওভারে আউট হন হাসান মাহমুদ। ৪ বলে কোনো রান না করেই তানজিম সাকিবের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।  ১০১ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে বসে নোয়াখালী এক্সপ্রেস। একপ্রান্ত আগলে রেখে একাই লড়াই চালানোর চেষ্টা করেন হায়দার আলী। শেষ পর্যন্ত ২৮ বলে ৩৩ রান করে ফিরতে হয় তাকেও। রিপনের বলে তানজিদ তামিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন হায়দার।  শেষদিকে দুটি বাউন্ডারি মারেন মেহেদী হাসান রানা। তার ১২ বলে ১১ রানের ইনিংসে কোনোমতে টেনেটুনে ১২৪ রানের সংগ্রহ পায় নোয়াখালী। রাজশাহীর হয়ে রিপন মণ্ডল নিয়েছেন ৪ উইকেট। তানজিম হাসান সাকিব ২টি, বিনুরা ফার্নান্দো ও হুসেইন তালাত নেন ১টি করে উইকেট।