বগুড়ার সাতটি সংসদীয় আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলে মোট ৩৯ জন ব্যক্তি মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত এসব মনোনয়নপত্র জমা পড়ে। তবে আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলম শেষ মুহূর্তে বগুড়া-৪ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে ব্যর্থ হন। নির্ধারিত সময়ের আধা ঘণ্টা পর পৌঁছানোয় রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়নপত্র গ্রহণ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বগুড়ার জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা তৌফিকুর রহমান জানান, ৭টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মোট ৪৫টি মনোনয়নপত্র তোলা হয়েছিল। এর মধ্যে ৩৯টি জমা পড়েছে। বগুড়া-১ ও বগুড়া-২ আসনে সর্বোচ্চ ৭টি করে এবং অন্য ৫টি আসনের প্রতিটিতে ৫টি করে মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। বিএনপির হেভিওয়েট ও বিকল্প প্রার্থী বগুড়া-৭ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন তার উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু। তবে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় বিকল্প হিসেবে একই আসনে দলটির গাবতলী উপজেলা কমিটির সভাপতি মোরশেদ মিল্টনও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বগুড়া-৬ আসনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেন জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা। বগুড়া-১ আসনে বিএনপির মূল প্রার্থী কাজী রফিকুল ইসলামের পাশাপাশি বিকল্প হিসেবে সোনাতলা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আহসানুল তৈয়ব জাকিরও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কাজী রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঋণ খেলাপির অভিযোগ ওঠায় হাইকমান্ড ঝুঁকি এড়াতে জাকিরকে মনোনয়ন দিয়েছে। তবে কাজী রফিকুল ইসলাম দাবি করেছেন, তিনি ঋণ খেলাপি নন এবং যাচাই-বাছাইয়ে তা প্রমাণিত হবে। বগুড়া-২ আসনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার পাশাপাশি শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন পাওয়া শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর শাহে আলমও মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। সূত্র জানায়, আসনটি মান্নার জন্য ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফাঁকা রেখেছিল বিএনপি। কিন্তু ঋণ খেলাপির তালিকায় নাম থাকায় ওইদিন রাতে মীর শাহে আলমকে মনোনয়ন দেয়া হয়। অবশ্য শেষ দিন সকালে উচ্চ আদালতের আদেশে মান্নার নির্বাচনে অংশগ্রহণের বাধা দূর হলে তিনিও মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এছাড়া বগুড়া-৩ আসনে বিএনপির আব্দুল মুহিত তালুকদার, বগুড়া-৪ আসনে মোশারফ হোসেন এবং বগুড়া-৫ আসনে গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। আরও পড়ুন: শিশু সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে মা, বাঁচাতে গিয়ে এক ব্যক্তি আহত অন্যান্য দলের প্রার্থী জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জেলার সবকটি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরা হলেন: বগুড়া-১ আসনে শাহাবুদ্দিন, বগুড়া-২ আসনে শাহাদুজ্জামান, বগুড়া-৩ আসনে নূর মোহাম্মদ, বগুড়া-৪ আসনে মোস্তফা ফয়সাল, বগুড়া-৫ আসনে দবিবুর রহমান, বগুড়া-৬ আসনে আবিদুর রহমান সোহেল ও বগুড়া-৭ আসনে গোলাম রব্বানী। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীরা হলেন: বগুড়া-১ আসনে এবিএম মোস্তফা কামাল পাশা, বগুড়া-২ আসনে জামাল উদ্দিন, বগুড়া-৩ আসনে শাজাহান আলী তালুকদার, বগুড়া-৪ আসনে ইদ্রিস আলী, বগুড়া-৫ আসনে মীর মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান, বগুড়া-৬ আসনে আ ন ম মামুনুর রশিদ ও বগুড়া-৭ আসনে শফিকুল ইসলাম। জাতীয় পার্টি ৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। তারা হলেন: বগুড়া-২ আসনে শরীফুল ইসলাম জিন্নাহ, বগুড়া-৩ আসনে শাহিনুল ইসলাম এবং বগুড়া-৪ আসনে শাহীন মোস্তফা কামাল ফারুক। এলডিপির দুই প্রার্থী হলেন: বগুড়া-৪ আসনে কামরুল হাসান মোহাম্মদ শাহেদ ফেরদৌস ও বগুড়া-৫ আসনে খান কুদরত-ই-সাকলায়েন। এছাড়া অন্যান্য দলের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন: গণঅধিকার পরিষদের সেলিম সরকার (বগুড়া-২), কমিউনিস্ট পার্টির শিপন কুমার রবিদাস (বগুড়া-৫), গণফোরামের জুলফিকার আলী (বগুড়া-১), বাসদের দিলরুবা (বগুড়া-৬), বাংলাদেশ কংগ্রেসের আসাদুল হক (বগুড়া-১), জাসদের (জেএসডি) আব্দুল্লাহ আল ওয়াকি (বগুড়া-৬), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের তৌহিদুল ইসলাম (বগুড়া-৩) এবং মুসলিম লীগের আনছার আলী (বগুড়া-৭)। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দুজন। তারা হলেন: বগুড়া-১ আসনে শাহজাদী আলম লিপি ও বগুড়া-২ আসনে রেজাউল করিম তালু।