বেনজির ভুট্টোর পর মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়া

বাংলাদেশের রাজনীতির এক অনন্য চরিত্র মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বেনজির ভুট্টোর পর মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি।গৃহবধূ থেকে রাষ্ট্রনায়কে উত্তরণের এই পথে চাপের কাছে নতি স্বীকার না করা এক সংগ্রামী ব্যক্তিত্ব। বেগম জিয়ার নেতৃত্বে দীর্ঘ রাজনৈতিক আন্দোলন ও সংগ্রামের চড়াই-উতরাইয়ের পথ পেরিয়ে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিজয়ী হয়। দেশের প্রথম ও বেনজির ভুট্টোর পর মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের কাছে শপথগ্রহণ করেন। খালেদা জিয়ার শাসন আমল, ১৯৯১-৯৬ এবং ২০০১-২০০৬ -- এই দুইভাগে ভাগ করেন অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক। ২০০১ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে খালেদা জিয়ার সরকার একের পর এক বিতর্কের মুখে পড়ে। সেই বিতর্ক থেকে তার দল ও সরকার আর বেরিয়ে আসতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ ঘটে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে খালেদা জিয়ার দল বিএনপির ব্যাপক ভরাডুবি হয়। এরপর থেকে দলটি রাজনৈতিকভাবে আরে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। আরও পড়ুন: বেগম জিয়ার আপসহীন সংগ্রাম নিয়ে কী বলছেন বিশ্লেষকরা? রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। এদিকে, ১৯৮৮ সালের ১৬ নভেম্বর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন বেনজির ভুট্টো। তিনি আধুনিক ইতিহাসে কোনো মুসলিম দেশের সরকারপ্রধান হিসেবে প্রথম নারী। তিনি ১৯৮৮ থেকে ১৯৯০ এবং ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আরও পড়ুন: যেভাবে গৃহবধূ থেকে দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হন বেগম জিয়া অনেক চড়াই-উতরাইয়ের পর ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আট বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসন কাটিয়ে ২০০৭ সালের অক্টোবর মাসে দেশে ফেরেন বেনজির ভুটো। কিন্তু ২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় প্রাণ হারান তিনি। সেদিন সন্ধ্যায় রাওয়ালপিন্ডির লিয়াকত বাগে এক নির্বাচনী সমাবেশ শেষে সভাস্থল ত্যাগ করার সময় ১৫ বছর বয়সি এক কিশোর তার ঘাড় ও বুকে গুলি করে। এরপর আততায়ী কিশোর নিজের শরীরে বেঁধে রাখা বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।