রাঙ্গামাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ঢুকতেই সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে চোখে পড়ে বয়সে তরুণ-প্রবীণের অদ্ভুত মিশ্রণ। এক পাশে স্কুলব্যাগ কাঁধে বর্তমান শিক্ষার্থীরা, অন্য পাশে চুল পাকা সাবেক শিক্ষার্থীরা। অনেকে আবার ২০ থেকে ৩০ বছর পর প্রথমবার স্কুলে ফিরেছেন।১৯৭৫ সালে যাত্রা শুরু করা বিদ্যালয়টি দুই দিনব্যাপী আয়োজনে তার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করেছে ২৮ ও ২৯ ডিসেম্বর।বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুই দিনের আয়োজনে দেশ ও বিদেশ থেকে প্রায় এক হাজার অতিথি, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অংশ নেন।সোমবার সকাল সাড়ে আটটায় ধর্মীয় উপাসনার মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অংশগ্রহণে একটি র্যালি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ প্রদক্ষিণ করে। র্যালির সামনে ছিল বিদ্যালয়ের স্কাউট দলের ব্যান্ড। একই রঙের টি-শার্ট ও ক্যাপে অংশগ্রহণকারীদের উপস্থিতিতে পুরো এলাকা উৎসবমুখর হয়ে ওঠে।জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর শান্তির প্রতীক হিসেবে কবুতর ও বেলুন উড়ানো হয়। সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রতীক হিসেবে ৫০টি প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হয়। পরে বিদ্যালয়ের পাঁচ দশকের ইতিহাস নিয়ে নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ঢাকা আর্চডায়োসিসের আর্চবিশপ বিজয় এন. ডি’ক্রুজ বলেন, এই বিদ্যালয় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছে।বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি লুইস অনিল কস্তা বলেন, বিদ্যালয়টি গড়ে উঠেছে স্থানীয় মানুষের প্রয়োজন থেকে। তার ভাষায়, শুরুতে অবকাঠামো ও অর্থ সবকিছুর সংকট থাকলেও শিক্ষা কার্যক্রম থামেনি।প্রধান শিক্ষিকা সিস্টার স্কলাস্টিকা পালমা বলেন, বিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থান অনেক বছরের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল।বিকেলে সাবেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সাবেক ও বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, শিক্ষক ও কৃতি শিক্ষার্থীদের সম্মাননা দেওয়া হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লটারি ড্রয়ের মাধ্যমে আয়োজন শেষ হয়।বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৫ সালের ১ জানুয়ারি মাত্র ৩২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে রাঙ্গামাটিয়া গীর্জা প্রাঙ্গণে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৮৫ সালে এটি এমপিওভুক্ত হয়। ১৯৯৪ সালে ঢাকা বোর্ডের অনুমোদন পাওয়ার পর শিক্ষার্থীরা প্রথমবারের মতো নিজ বিদ্যালয়ের নামে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার ৭৯০ জন শিক্ষার্থী এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছে।