জকসু নির্বাচন স্থগিতের খবরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫ স্থগিত করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ইন্তেকাল করায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়ার খবর প্রকাশ হলে সব ঘরানার শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ শুরু করেন। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ভোটগ্রহণের কথা ছিল। সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা ভোট দেয়ার জন্য দলে দলে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। এরপর খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবরে বিশ্ববিদ্যালয় জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডাকে। সভায় নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে প্রশাসন এ বিষয়ে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আপনারা অবগত আছেন যে, বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের আপোসহীন নেত্রী এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা বেগম খালেদা জিয়া পরলোকগমন করেছেন। তার মৃত্যুতে পুরো দেশের ন্যায় আমরাও গভীরভাবে শোকাহত এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি। এর প্রেক্ষিতে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট এক জরুরি সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আজকের অনুষ্ঠিতব্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫ সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করেন।’ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘জকসু নির্বাচন কমিশন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত একটি প্রতিষ্ঠান বিধায় এটি সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য। এমতাবস্থায়, জকসু নির্বাচন কমিশন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫ সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করছে। নির্বাচনের পরবর্তী তারিখ শীঘ্রই জানিয়ে দেয়া হবে।’ আরও পড়ুন: বেগম জিয়ার মৃত্যুতে জকসু নির্বাচন স্থগিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দুই দশক পর প্রথমবারের মতো ছাত্র সংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। তবে ভোটগ্রহণ শুরুর আগেই এ নির্বাচন স্থগিত করা হলো। নতুন সময়সূচি পরবর্তীতে জানাবে নির্বাচন কমিশন। এর আগে নির্বাচনের জন্য পুরো ক্যাম্পাস নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়। ১৯৮৭ সালে তৎকালীন জগন্নাথ কলেজে ছাত্রসংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কলেজটি ২০০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হওয়ার পর এটিই প্রথম ছাত্র সংসদ নির্বাচন। ৩৯টি কেন্দ্রে ১৭৮টি বুথে ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। কমিশন সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় সংসদের জন্য ৩৮টি এবং হল সংসদের জন্য একটি ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়। প্রতি ১০০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একটি করে ভোটগ্রহণ বুথ ছিল। ভোটগ্রহণ শেষে মেশিনের মাধ্যমে ভোট গণনা করার কথা জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, জকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ১৬ হাজার ৪৪৫ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৮ হাজার ৪৭৯ জন এবং পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ১৭০ জন। কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট প্রার্থী ১৮৭ জন। নির্বাচনের মোট প্যানেল ৪টি (ছাত্রদল, শিবির, ছাত্রশক্তি ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রান্ট)। সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী ৯ জন, সহসাধারণ সম্পাদক ৮ জন। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়েছিল।