ময়মনসিংহ জেলার ১১টি সংসদীয় আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ১১৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে শেষদিনে জমা দিয়েছেন ৯৪ জন। শেষদিন পর্যন্ত ২৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা না দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে নির্বাচনি আমেজ বইতে শুরু করেছে। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রাত ৭টার দিকে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. সাইফুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনে ১১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে শেষদিন জমা হয়েছে ৯টি মনোনয়ন। এর মধ্যে বিএনপি দলীয় প্রার্থী সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী সালমান ওমর রুবেলসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা রয়েছেন। ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) আসনে বিএনপির প্রার্থী মোতাহার হোসেন তালুকদারসহ ১৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন ৯ জন। এতে জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা রয়েছেন। ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার এম. ইকবাল হোসাইন। তার সঙ্গে এ আসনে দলের বিদ্রোহী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সদ্য বহিষ্কৃত আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আহম্মেদ তায়েবুর রহমান হিরন। তাদের নিয়ে এ আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ৭ জন প্রার্থী। তারা হলেন-জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মাওলানা বদরুজ্জামান, নেজামে ইসলাম পার্টির প্রার্থী হাফেজ মাওলানা আবু তাহের খান, এনসিপির কবি সেলিম বালা প্রমুখ। তবে এ আসনে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন মোট ৮ জন প্রার্থী। ময়মনসিংহ-৪ (সদর) বিভাগীয় সদর আসনে ১২ জন প্রার্থী মনোনয়ন সংগ্রহ করে শেষ পর্যন্ত জমা দিয়েছেন ১০ জন। তারা হলেন-ধানের শীষের প্রার্থী ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ, জামায়াতের প্রার্থী কামরুল আহসান ইমরুল, খেলাফত মজলিসের মুফতি কাজী মোশতাক আহমাদ ফারুকী, সিপিবির প্রার্থী অ্যাডভোকেট এমদাদুল হক মিল্লাতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসনে বিএনপির প্রার্থী ও দলটির দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। এ আসনে ৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে ৬ জন জমা দিয়েছেন। ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়ীয়া) আসনে মোট মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ১০ জন। তবে জমা দিয়েছেন ৯ জন প্রার্থী। তারা হলেন- বিএনপির আখতারুল আলম ফারুক, জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ কামরুল হাসান মিলন, জামায়াতের বিদ্রোহী প্রার্থী জসিম উদ্দিন প্রমুখ। ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়ে শেষদিনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মাহাবুবুর রহমান লিটন। এছাড়াও এ আসনে ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেও জমা দিয়েছেন ৯ জন। তারা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থী। ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসনে ৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে সবাই জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ধানের শীষের প্রার্থী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক প্রকৌশলী লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু, বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হয়েছেন শাহ নূরুল কবীর শাহীনসহ প্রমুখ। ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনে ১৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে শেষতক জমা দিয়েছেন ১০ জন প্রার্থী। তারা হলেন- বিএনপির প্রার্থী ইয়াসের খান চৌধুরী, বাংলাদেশ ডেভলমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান একেএম আনোয়ারুল ইসলাম চাঁনসহ অন্যান্য দলের প্রার্থী। ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আখতারুজ্জামান বাচ্চু। এ আসনটিতে১৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে ১২ জন জমা দিয়েছেন। বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন এবি সিদ্দিকুর রহমান, মুশফিকুর রহমান ও আলমগীর মাহমুদ আলম। ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফখরুদ্দিন আহম্মেদ বাচ্চু। তার সঙ্গে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন মুহাম্মদ মোর্শেদ আলম এবং অন্যান্য দলের প্রার্থীরা। এ বিষয়ে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রেজা মো. গোলাম মাসুম প্রধান বলেন, এ জেলার ১১টি সংসদীয় আসনে ১১৭ প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও শেষদিন জমা দিয়েছেন ৯৪ জন। নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে জেলা প্রশাসন বদ্ধপরিকর। নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে সবধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। কামরুজ্জামান মিন্টু/এমএন