একজন নারী, একা দাঁড়িয়ে ছিলেন রাষ্ট্রযন্ত্রের নিপীড়ন, নির্যাতন, অপমান ও অপদস্থের বিরুদ্ধে। স্বামী হারানোর শোক আর সন্তানের শূন্যতা বুকে চেপে লড়াই করে গেছেন সমস্ত ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে। এত দীর্ঘ ছিল সেই লড়াই, এত অসীম যন্ত্রণার; মাঝে মাঝে বেগম খালেদা জিয়াও ক্লান্ত হয়ে পড়তেন। তবুও তিনি রণভঙ্গ দেননি। কখনোই ভেঙে পড়েননি। হাল ছাড়েননি কিংবা ধৈর্যহারাও হননি।অসীম সাহসের বাতিঘর হয়ে আর সমস্ত যন্ত্রণাকে পদদলিত করে ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন বাংলাদেশের সমন্বিত প্রতিচ্ছবি হয়ে তিনি। মৃত্যুর আগে এক কঠিন সময় পার করেছেন হার না মানা এই নেত্রী। ফুসফুসে সংক্রমণসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা নিয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ৮০ বছরের জীবনে নানা রোগ বাসা বেঁধেছিল তাঁর শরীরে। তাই শেষ সময়ে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটময় হয়ে উঠেছিল। সম্প্রতি শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউ-সমমানের হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রাখা হয়েছিল। তারপর থেকেই প্রতি মুহূর্তে দেশের কোটি কোটি মানুষের হৃদয়জুড়ে ছিল দেশনেত্রীর সুস্থতায় গভীর উদ্বেগ ও প্রার্থনা। কিছুদিন আগে ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন শেষবারের মত বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতি তুলে ধরেছিলেন গণমাধ্যমে। তখনও তিনি জানান, ‘চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন খালেদা জিয়া। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত ও খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হবে। আরও পড়ুন: বেগম জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক এবং ১ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বরাবরই বলে আসছেন, বেগম খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য দেশের জন্য ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, গণতন্ত্র উত্তরণের এই কঠিন সময়ে তাঁর উপস্থিতিও ছিল অপরিহার্য । গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশের জন্য খালেদা জিয়ার ত্যাগকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেও উল্লেখ করেন তারা। বিশ্লেষকরা আরও জানান, অসুস্থতা সত্ত্বেও অভ্যুত্থান-পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপির চেয়ারপারসনের মত অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদের চিন্তা ও মতামত ভীষণ জরুরি ছিল। বিশ্লেষকদের শঙ্কা, বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কারণ, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান ছিল দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে। সম্প্রতি তাঁর জন্য দোয়া চাইতে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, ‘গণতান্ত্রিক উত্তরণের এই সময়ে খালেদা জিয়া জাতির জন্য ভীষণ রকম অনুপ্রেরণা।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সারাজীবন দেশে ও জনগণের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই করতে গিয়ে তাকে ভীষণ নিষ্ঠুরভাবে ফ্যাসিস্ট শাসকদের হাতে নির্যাতিত হতে হয়েছে। এ নির্যাতন এতটাই নির্মম ছিল যে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তার জীবন বিপন্ন অবস্থায় পড়ে যায়। দেশের জন্য তিনি নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন; তবুও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। তাই দেশের প্রতিটি দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল এবং সব শ্রেণি-পেশার মানুষ তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এটি একজন রাজনৈতিক অভিভাবকের প্রতি নাগরিকদের অকৃত্রিম ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছু নয়। আরও পড়ুন: মুক্তিযোদ্ধা খালেদা জিয়া তিনি আরও বলেন, জেল থেকে মুক্ত হওয়ার পর খালেদা জিয়া দেশের রাজনীতিতে দিশারীর ভূমিকা পালন করেন। দেশের একজন মুরব্বি ও অভিভাবক হিসেবে তাঁর নীরব-নিঃশব্দ অনেক ভূমিকা ছিল। মূলত বেগম জিয়ার উপস্থিতিই ছিল প্রত্যাশিত গণতন্ত্রের জন্য বড় অনুপ্রেরণার শক্তি। তাঁর এই অভিভাবকত্বকে সব রাজনৈতিক দল শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করেছিল। এই অভিভাবকসুলভ চরিত্রই তাকে আজীবন অমর করে রাখবে। এরই মধ্যে ইতিহাসে তাঁর জন্য গৌরবোজ্জ্বল স্থান নির্ধারিত হয়ে গেছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপির তখন কঠিন দুঃসময়। দেশে চলছে এরশাদের সামরিক শাসন; গভীর সংকটে দেশ। সেসময় ঘোর অনীহা সত্ত্বেও প্রথমে কর্মী এবং পরে দলের হাল ধরতে রাজনীতির মাঠে নামতে হয়েছিল বেগম খালেদা জিয়াকে। সেই থেকে শুরু তাঁর চার দশকের রাজনীতির পথচলা। এর মধ্যেই এরশাদ-বিরোধী আন্দোলনে সাহসী নেতৃত্ব দিয়ে দেশের সাধারণ মানুষের কাছে তিনি হয়ে ওঠেন আপসহীন নেত্রী। রাজনৈতিক অঙ্গণে পা রাখার আট বছরের মাথায় হয়েছিলেন দেশের প্রথম নির্বাচিত নারী প্রধানমন্ত্রী। এরপর নানা চড়াই-উতরাই পেরোতে হয়েছিল তাকে। কখনও সরকারপ্রধান, কখনও বিরোধী দলের নেত্রী হয়ে সরব ছিলেন রাজপথে। এক-এগারোর সরকার এবং আওয়ামী লীগ সরকারের সময় খালেদা জিয়ার দুঃসহ কারাবন্দী জীবন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম ট্র্যাজেডি। গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বেগম খালেদা জিয়ার প্রতিজ্ঞা ও প্রতিশ্রুতিকে অগ্রগণ্য বলে স্মরণ করেন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক ঐক্যের প্রতিশব্দ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন ইতিহাসবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ছিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়ার যে আপসহীন সংগ্রাম সেটাই তাকে বর্তমান সময়ে একজন অনিবার্য রাজনীতিবিদ হিসেবে দেশের অভিভাবকে পরিণত করেছিল। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে তিনি বিশেষভাবে অনিবার্য হয়ে উঠেছিলেন। এই মুহূর্তে তার উপস্থিতি খুবই দরকার ছিল। দলটির নেতাকর্মীদের কাছেও বেগম জিয়া এক কথায় ‘সিম্বল অব ইউনিটি’। আর দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে তিনি ছিলেন অনন্য ব্যক্তিত্ব। আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আওয়ামী লীগের পেজে শেখ হাসিনার শোক বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘ পথচলায় বিভিন্ন সময়ে তাকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার চেষ্টাও কম হয়নি। কিন্তু তাঁর তুমুল জনপ্রিয়তা সমস্ত ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছিল। বিএনপি চেয়ারপারসন গুরুতর অসুস্থ হয়ে যখন থেকে হাসপাতালে, তখন থেকেই তাঁর অনুপস্থিতিতে বর্তমান বাস্তবতায় দেশ ফের ঝুঁকিতে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে বলেও জানান বিশ্লেষকরা। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দুর্নীতির মামলায় কারাবরণ এবং তারপর শারীরিক অসুস্থতা; এসব কারণে ২০১৮ সাল থেকে বিএনপির রাজনীতিতে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। তবুও শেখ হাসিনার প্রতিষ্ঠিত স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর লড়াই করেছে তাঁর নেতৃত্বাধীন দলটি। দলের অসংখ্য নেতাকর্মীর মতই তার মাশুল দিয়েছেন খালেদা জিয়া নিজেও। অত্যন্ত খারাপ শারীরিক অবস্থাতেও দীর্ঘদিন অন্যায়ভাবে জেলে আটক ছিলেন। পরবর্তীতে এই অসুস্থতাই তাকে মৃত্যুর কাছাকাছি নিয়ে গেছিল। বিএনপি চেয়ারপারসনের অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ার পেছনেও হাসিনা সরকারের ষড়যন্ত্র ক্রিয়াশীল ছিল বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অসুস্থতা কিংবা রাজনীতির মাঠে শারীরিকভাবে অনুপস্থিত থাকলেও তিনি দলের লাখো কর্মীর আবেগ ও অনুপ্রেরণার কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন। বিশ্লেষক ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়া রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দিয়ে এত বছর দেশের গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যুদ্ধ করেছিলেন। অনেক কষ্ট পেয়েছেন; জেলে গেছেন; অনেক কটুকথাও শুনেছেন। কিন্তু তিনি প্রতিশোধ নেননি। প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দেশ ছেড়ে যাননি। তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সবসময় বলতেন, ‘এই দেশ আমার, এই দেশ ছেড়ে কোনদিনই যাব না, এদেশের জনগণের সঙ্গে আমি থাকব।’ সেজন্য দল-মত নির্বিশেষে তিনি একটি আলাদা উচ্চতায় পৌঁছে গেছিলেন। যাকে বলা হয় ‘মুরব্বি’; তাঁর দিকে সবাই উপদেশের জন্য তাকিয়ে থাকত। দেশের এই সময়ে তাঁর সুস্থ হয়ে ফিরে আসাটা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আরও পড়ুন: সংকট থেকে সংস্কার: বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে রাষ্ট্রের বাঁকবদল দলীয় চেয়ারপারসনের সুস্থ হয়ে ফিরে আসার প্রতীক্ষায় যখন দল ও পুরো দেশ, তখন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দুঃখ ভারাক্রান্ত কণ্ঠে বলেছিলেন, আমাদের চেয়ারপারসন দেশের গণতন্ত্র, মানুষের ভোটাধিকার ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার জন্য আপসহীন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি শুধু বিএনপি নয়, এ দেশের সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। তিনি আছেন গণতন্ত্রের দৃঢ়তম প্রতীক হিসেবে। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সংকটাপন্ন অবস্থায় এখন হাসপাতালে। সবাই তার রোগমুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দু’হাত তুলে দোয়া করছি। জাতীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘ সংগ্রাম, ত্যাগ ও দৃঢ় অবস্থানকে দেশের জন্য এক উল্লেখযোগ্য অধ্যায় উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার সংগ্রামে সবসময়ই আমাদের নেত্রী ছিলেন আপসহীন। গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তার সুস্থতা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতার জন্য অপরিহার্য ছিল। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের কোটি কোটি প্রতিবাদী মানুষের কণ্ঠস্বর—এমনটাই উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, রাজপথে আন্দোলন করে সম্মুখদ্বার দিয়ে প্রবেশ করে তিনি রাজনীতিতে নিজের আসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং বঞ্চিত মানুষের গণতান্ত্রিক তথা অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। শুধু তাই নয়, নীতির প্রশ্নে চিরদিন তিনি ছিলেন অবিচল। আর সে কারণেই এ দেশের মানুষ ভালোবেসে তাকে উপাধি দিয়েছে ‘আপসহীন নেত্রী’র। বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, রাজনীতিতে আরও একটি অনন্য গুনের অধিকারী ছিলেন বেগম জিয়া; সেটি হল-কোনদিন প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন না। তাছাড়া কেউ ভুল করলে তিনি সবসময় ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতেন। এসব কিছুই রাজনীতিতে তাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছিল যে, তিনি ছিলেন সকল দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বের এক রাষ্ট্রনায়ক। সবাই অধীর আগ্রহে তার সুস্থ হয়ে ফিরে আসার অপেক্ষায় ছিলাম। আরও পড়ুন: বেগম জিয়ার মৃত্যুতে শোকবার্তা, কী বললেন নরেন্দ্র মোদি? বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, গণতন্ত্রের লড়াই করতে করতেই বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুপথযাত্রী হয়েছিলেন। খালেদা জিয়া ছিলেন আমাদের আকাঙ্ক্ষা। সমস্ত বাংলাদেশ দল-মত নির্বিশেষে সকলেই তার নামে ঐক্যবদ্ধ ছিল। তিনি সুস্থ হয়ে উঠলে বাংলাদেশ গণতন্ত্র ফেরত পেত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যে বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম, সেই স্বপ্ন পূরণ হত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের এক অনন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। নাহিদ ইসলাম বলেন, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষার আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়া কয়েক দশক ধরে অবিচল ভূমিকা পালন করে গেছেন। ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রচক্রের লাগাতার নির্যাতন, মিথ্যা মামলার পরিক্রমা এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ভয়াবহতার মাঝেও তার অটল মনোবল ও আপসহীন অবস্থান বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আরও পড়ুন: হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনামলে বেগম জিয়া ছিলেন সংগ্রাম ও প্রতিরোধের অনন্য প্রতীক: প্রধান উপদেষ্টা তিনি আরও বলেন, ৯০-এর গণ-অভ্যুত্থান, স্বৈরতন্ত্রবিরোধী সংগ্রাম এবং পরবর্তী সময়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রত্যেকটি পর্বে খালেদা জিয়ার দৃঢ়তা, দেশপ্রেম ও নেতৃত্ব জাতীয় জীবনে গভীর প্রভাব রেখেছিল। বাংলাদেশের বহু প্রজন্ম তাকে দেখেছে সাহস, সহনশীলতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতীক হিসেবে। আমার বাংলাদেশ (এবি পার্টি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতির ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দীর্ঘ প্রতিকূলতা, সীমাহীন চাপ ও কঠিন বাস্তবতার মাঝেও তিনি যে দৃঢ়তা, সাহস ও আপসহীন নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন, তা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে উজ্জ্বল অক্ষরে লেখা থাকবে। তিনি আরও বলেন, শুধু নিজের দলের জন্য নয়, দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ, গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা এবং মানবিক মূল্যবোধ রক্ষায় তাঁর ভূমিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। ক্ষমতার পালাবদলের এই সময়ে তার মত অভিজ্ঞ নেত্রীর উপস্থিতি জাতীয় স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখত বলে বিশ্বাস করি। সূত্র বাসস