তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে যশোরজুড়ে। মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) ভোরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর সংবাদ পৌঁছালে জেলাজুড়ে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে শোকের মাতম শুরু হয়।ভোর থেকেই যশোরের লালদীঘি পাড়স্থ জেলা বিএনপি কার্যালয়ে জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। প্রিয় নেত্রীকে হারানোর শোকে অনেক প্রবীণ নেতাকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে এবং শোকের চিহ্ন হিসেবে নেতাকর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করছেন।শহরের দড়াটানা, বড় বাজার এবং পালবাড়ি মোড়সহ গুরুত্বপূর্ণ জনপদগুলোতে সাধারণ মানুষের মুখে ছিল বেগম জিয়ার স্মৃতিচারণ। রিকশাচালক থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, সবাইকে এক ধরনের স্তব্ধতার মধ্যে দেখা গেছে। সাধারণ নাগরিকদের মতে, তিনি ছিলেন দেশের নারী শিক্ষার অগ্রদূত ও গণতন্ত্র রক্ষার আপসহীন প্রতীক।বিএনপি নেতা মুনীর আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা বিষক্রিয়া করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তিনি দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং নারী শিক্ষার প্রসারে তার অবদান অনস্বীকার্য। তার চলে যাওয়া একটি যুগের অবসান। এ ক্ষতি অপূরণীয়।আরও পড়ুন: বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাতিসংঘের শোকবার্তাজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন ঐক্যের প্রতীক, গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে তিনি কখনও মাথা নত করেননি। তাঁর মৃত্যুতে অভিভাবক শুন্য হয়ে পড়েছ দল ও দেশ।বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেন, দেশনেত্রী শুধু একটি দলের নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন এই দেশের কোটি মানুষের আস্থার শেষ আশ্রয়স্থল। তাঁর চলে যাওয়া দেশের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। শোকাহত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম। ছবি: সময় সংবাদবিপ্লব নামে একজন সাধারণ নাগরিক বলেন, খালেদা জিয়া দেশের রাজনীতির একটি বড় স্তম্ভ ছিলেন। তার শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে, কিন্তু তার মৃত্যুতে দেশের রাজনীতিতে এক বিশাল শূন্যতা তৈরি হলো। আমরা আশা করি, তার দেখানো পথে রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক চর্চা বজায় থাকবে।এদিকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে মিল রেখে যশোরেও সাত দিনের শোক পালনের প্রস্তুতি চলছে। আগামী কয়েকদিন জেলার প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়নে কালো ব্যাজ ধারণ, পবিত্র কোরআন খতম এবং বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।