রাজধানীর শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চের সমাবেশস্থল থেকে মো. আরাফাত জামান (৩৯) নামের এক যুবককে আটক করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে খেলনা পিস্তল উদ্ধার করা হয়। এর আগেও নিজেকে মেজর পরিচয় দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ওই যুবকের বিরুদ্ধে। সে ঘটনায় তার বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় একটি মামলাও হয়। পুলিশ বলছে, আটক যুবকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। গতকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ৮টা ৩০ মিনিটে শাহবাগে হাদি চত্বরে ইনকিলাব মঞ্চের আন্দোলন চলাকালে সন্দেহভাজন আরাফাত জামান নামের ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। পরে আন্দোলনকারীরা তাকে পিস্তল সদৃশ অস্ত্রসহ শাহবাগ থানায় সোপর্দ করে। পরবর্তীতে সিআইডির পরীক্ষায় উদ্ধারকৃত অস্ত্রটি খেলনা পিস্তল বলে নিশ্চিত হয়। গতকালের ঘটনায়ও মামলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। জানা গেছে, আটক আরাফাত জামানের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার অরণ্যপাশা এলাকায়। তিনি বর্তমানে ধানমন্ডি এলাকায় বসবাস করছিলেন। শাহবাগ থানা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার রাতে শাহবাগে ঘটনার পর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে পিস্তল সদৃশ বস্তুটি জব্দ করা হয়। একই সময় সিআইডির একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরীক্ষা করে নিশ্চিত করে যে সেটি একটি খেলনা পিস্তল। আরও পড়ুনশাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চের পাশ থেকে ‘পিস্তল’সহ যুবক আটক যেসব কারণে বন্ধ হচ্ছে আসিফসহ জনপ্রিয় ব্যক্তির ফেসবুক পেজ আরাফাত জামান যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলস থেকে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি সম্পন্ন করে দেশে ফেরেন। তার বাবা ধাবা গ্রুপের কান্ট্রি ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং ২০২২ সালে মারা যান। তার মা মকবুল হোসেন কলেজের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লায় বিয়ের পর তার স্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। এরপর তাদের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। পরিবারের দাবি, এসব ঘটনার পর থেকেই তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। রমনা মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, এর আগেও গত ৪ অক্টোবর সকালে রাজধানীর পরিবাগ এলাকায় কোমরে অস্ত্র সদৃশ বস্তু নিয়ে অবস্থানকালে আরাফাত জামানকে আটক করে পুলিশ। সে সময় জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজেকে ডিজিএফআইয়ের মেজর মো. আরাফাত জামান পরিচয় দিয়ে দাবি করেন যে, তিনি প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’ কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ডিউটিতে নিয়োজিত রয়েছেন। তবে তিনি কোনো বৈধ পরিচয়পত্র উপস্থাপন করতে অস্বীকৃতি জানান। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, তোরা ঠিকভাবে ডিউটি কর না, নইলে তোদের চাকরি খেয়ে দেবো। পরবর্তী সময়ে তিনি ‘ZAMAN MD ARAFAT’ নামে একটি আইডি কার্ড সদৃশ কার্ড প্রদর্শন করেন, একটি গোয়েন্দা সংস্থার বলে দাবি করেন। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে যাচাই করে তার গোয়েন্দা সংস্থার কোনো কর্মকর্তার পরিচয়ের সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় সেসময় রমনা থানায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান জানান, ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আরাফাত জামানকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন। টিটি/কেএসআর