শেষ হলো এক মহাকাব্য, স্মৃতি হয়ে রইল বেগম জিয়ার হাতে লাগানো সেই নিমগাছ

মানুষ মরে যায়, কিন্তু তার হাতের ছোঁয়া থেকে যায় প্রকৃতির নিবিড় ছায়ায়। ২০০৮ সালের এক বিকেলে ফেনীর ফুলগাজীর মজুমদার বাড়ির দিঘির পাড়ে পরম মমতায় একটি নিম চারা রোপণ করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। আজ ১৭ বছর পর সেই চারাটি বিশাল মহীরুহ হয়ে ছায়া দিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু নেই সেই মায়াবী হাতের মানুষটি।মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোরে দেশনেত্রীর মহাপ্রয়াণের সংবাদ যখন শ্রীপুর গ্রামে পৌঁছায়, তখন বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা সেই নিমগাছটিই যেন হয়ে ওঠে শোকাতুর জনপদের নীরব সঙ্গী। বৃক্ষের গোড়ায় টাইলসে খোদাই করা নামটি আজ ঝাপসা হয়ে আসছে গ্রামবাসীর চোখের জলে।স্থানীয়রা পরম মমতায় জানান, ২০০৮ সালে পৈত্রিক বাড়িতে এসে নিজ হাতে এটি রোপণ করেছিলেন ‘ফেনীর কন্যা’ বেগম জিয়া। পরিচর্যায় বেড়ে ওঠা এই বৃক্ষটির গোড়ায় টাইলস দিয়ে পরম যত্নে লিখে রাখা আছে তার নাম।কেবল নিমগাছই নয়, মজুমদার বাড়ির প্রতিটি কোণ যেন বেগম জিয়ার স্মৃতিতে স্পন্দিত। ঘরের ভেতরে যে চেয়ারটিতে তিনি বসতেন, বিশ্রামের সেই ছোট্ট খাট আর খাবারের টেবিল সবকিছুতেই লেগে আছে তার হাতের ছোঁয়া। বাড়ির স্বজনরা বলছেন, এই আসবাবপত্রগুলো এখন তাদের কাছে কেবল বস্তু নয়, বরং নেত্রীর অস্তিত্বের অংশ।আরও পড়ুন: ফেনীর আকাশে শোকের মেঘ, চিরবিদায় শ্রীপুর মজুমদার বাড়ির মেয়ে খালেদা জিয়ারবেগম জিয়ার চাচাতো ভাই শামীম হোসেন মজুমদার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, 'বাড়িতে আসলে তিনি বড়দের যেমন শ্রদ্ধা করতেন, ছোটদের তেমনি অনেক বেশি আদর করতেন। তাকে হারিয়ে দেশ ও জাতির যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, তা কখনও পূরণ হওয়ার নয়।'২০০৮ সালে শেষবারের মতো বাবার বাড়িতে এসে দাদা সালামত আলী মজুমদারের কবর জিয়ারত করে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছিলেন তিনি। নিজ এলাকায় জনসাধারণের জন্য তিনি নির্মাণ করেছেন অসংখ্য মাদ্রাসা, মসজিদ, স্কুল ও কলেজ।