মিয়ানমারে চলমান নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণে রাখবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ান। জোটের পক্ষ থেকে এই অবস্থান ব্যক্ত করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ার ইব্রাহিম মিয়ানমারের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী তুলে ধরে বলেন, ‘মিয়ানমারের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রতিটি পদক্ষেপ আসিয়ান নেতারা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবেন। মালয়েশিয়া ও আসিয়ান এই পরিস্থিতি অত্যন্ত সাবধানতার সাথে পর্যবেক্ষণ করবে।" তিনি আরও বলেন, ‘যেকোনো মূল্যায়ন হবে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে যাতে করে দেশটিতে সহিংসতা না বাড়ে এবং রাজনৈতিক বিভেদ আরও গভীর না হয়।’ ২০২১ সালে রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করে জান্তা সরকার। প্রায় চার বছর পর এই সরকারের নেতৃত্বে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত রোববার (২৮ ডিসেম্বর) প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ করা হয়। মিয়ানমারের জান্তা সরকার এই নির্বাচনকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ ও বৈধ দাবি করলেও আন্তর্জাতিক মহলে এটি চরম সমালোচনার মুখে পড়েছে। জাতিসংঘ, পশ্চিমা দেশগুলো এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এই নির্বাচনকে একটি ‘প্রহসন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তাদের মতে, এটি মূলত সামরিক শাসনকে দীর্ঘস্থায়ী করার একটি অপচেষ্টা। আরও পড়ুন: মিয়ানমারে প্রথম ধাপের নির্বাচনে জান্তা সমর্থিত দলের জয় দাবি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, আসিয়ান এমন একটি সমাধান চায় যা হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য। আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, ‘আমরা এমন কোনো পদক্ষেপ নেব না যা জান্তা সরকারকে অকালপক্ক বৈধতা প্রদান করে। আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো সহিংসতা কমানো এবং একটি সঠিক ও কার্যকর পথ বের করা।’ ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে শান্তি ফেরাতে আসিয়ান গৃহীত ‘পাঁচ দফা ঐকমত্য’ পরিকল্পনাটি এখন পর্যন্ত সফলতার মুখ দেখেনি। জান্তা সরকার শুরু থেকেই বিরোধীদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে তাদের সাথে সংলাপে বসতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে সামরিক জান্তা ক্ষমতা দখলের পর থেকেই মিয়ানমারে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। বর্তমানে দেশটির বিশাল একটি অংশ সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, যা জান্তা সরকারের শাসনব্যবস্থার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।