সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোকে স্তব্ধ তার স্মৃতিবিজড়িত জেলা বগুড়া। নেত্রীকে শেষ বিদায় জানাতে এবং জানাজায় অংশ নিতে জেলাজুড়ে ব্যাপক প্রস্তুতি লক্ষ্য করা গেছে। এরই মধ্যে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে শহরের নওয়াববাড়ি রোডে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে এবং শোক প্রকাশের জন্য একটি শোকবহি খোলা হয়েছে। সকাল থেকেই সর্বস্তরের মানুষ সেখানে এসে স্বাক্ষর করছেন। নেতাকর্মীদের সবার বুকে শোভা পাচ্ছে শোকের প্রতীক কালো ব্যাজ। এদিকে আগামীকাল বুধবার ঢাকায় বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হবে। ওই জানাজায় বগুড়ার সর্বস্তরের মানুষকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আজ সকাল থেকেই জেলাজুড়ে মাইকিং করা হচ্ছে। জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নেতাকর্মীরা বিভিন্ন যানবাহনে করে ইতোমধ্যে ঢাকার পথে রওনা দিয়েছেন। বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশা বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কেবল আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক ছিলেন না, তিনি ছিলেন আমাদের মায়ের মতো। বগুড়ার মানুষের সঙ্গে তার আত্মার সম্পর্ক। তার মৃত্যুতে আজ আমরা আক্ষরিক অর্থেই এতিম হয়ে গেলাম। জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সহিদ-উন-নবী সালাম বলেন, বেগম জিয়ার মাগফেরাত কামনায় আগামী ৭ দিন বগুড়ায় মাদরাসা গুলোতে কোরআন খতম দেওয়া হবে। আমরা বগুড়া থেকে ঢাকায় যাচ্ছি সেখানে জানাজা এবং দাফনে অংশগ্রহণ করবো। এদিকে বেগম জিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় এদিন বাদ জোহর শহরের বায়তুর রহমান সেন্ট্রাল মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। দোয়া মাহফিলে জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, সাবেক সভাপতি ভিপি সাইফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা আলী আজগর তালুকদার হেনা, জয়নাল আবেদীন চান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেনসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান গাবতলীর বাগবাড়ি ও আশপাশের এলাকায় মানুষের মধ্যে শোকের মাতম দেখা গেছে। ১৯৬০ সালে যখন তিনি পুত্রবধূ হিসেবে বাঘবাড়ি গ্রামে আসেন, তখন থেকেই স্থানীয়দের কাছে তিনি ছিলেন পরম আদরের ‘ব্যাটার বউ’। ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বিএনপি সংগঠিত হওয়া এবং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তাঁর আপসহীন ভূমিকা বগুড়াবাসীকে গর্বিত করেছিল। বগুড়ার সংসদীয় রাজনীতির সঙ্গে বেগম জিয়ার সম্পর্ক ছিল অবিচ্ছেদ্য। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এই জেলার বিভিন্ন আসন থেকে তিনি যতবারই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, প্রতিবারই বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন। আজ সেই নেত্রীকে হারিয়ে গাবতলীর বাগবাড়িসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে কোরআন খতম ও এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণ করছেন সাধারণ মানুষ। এল.বি/কেএইচকে/এএসএম