ই-রিটার্ন দাখিল করেছেন ৩০ লাখের বেশি করদাতা: এনবিআর

চলতি করবছরে এখন পর্যন্ত ৩০ লাখের বেশি করদাতা ই-রিটার্ন দাখিল করেছে বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।এতে বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এক বিশেষ আদেশের মাধ্যমে চলতি বছর ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রবীণ করদাতা, শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা, মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধির মাধ্যমে রিটার্ন দাখিল এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিক ছাড়া সব ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে। গত ৪ আগস্ট অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ কর বছরের জন্য www.etaxnbr.gov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল কার্যক্রম শুভ উদ্বোধন করেন।এ পর্যন্ত প্রায় ৪৫ লাখ করদাতা ই-রিটার্ন সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন করেছেন এবং ৩০ লাখের বেশি করদাতা ২০২৫-২৬ কর বছরের ই-রিটার্ন দাখিল করেছেন। যাদের জন্য ই-রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়নি তারাও অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করছেন।গত আগস্টে ২ লাখ ৫১ হাজার ৭৮৪ জন, সেপ্টেম্বরে ৩ লাখ ১ হাজার ৩০২ জন, অক্টোবরে ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৭৬ জন, নভেম্বরে ১০ লাখ ৪০ হাজার ৪৭২ জন এবং ডিসেম্বর মাসে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ করদাতা ই-রিটার্ন দাখিল করেছেন। আর গত বছর একই সময়ে ১০ লাখ ২ হাজার ২৯৮ জন করদাতা ই-রিটার্ন দাখিল করেছিলেন। আরও পড়ুন: প্রার্থীদের আয়কর রিটার্ন দাখিলে বিশেষ ব্যবস্থা করল এনবিআরকরদাতাদের সুবিধার জন্য সরকার এরই মধ্যে রিটার্ন দাখিলের সময় ৩১ জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। বর্ধিত সময়ের মধ্যে চলতি বছর ৪০ লাখের বেশি করদাতা ই-রিটার্ন দাখিল করবে বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী। বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতাদের ক্ষেত্রে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক না হলেও পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর, ই-মেইল অ্যাড্রেস ইত্যাদি তথ্য ereturn@etaxnbr.gov.bd ই-মেইলে পাঠিয়ে আবেদন করলে আবেদনকারীর ই-মেইলে ওটিপি এবং রেজিষ্ট্রেশন লিংক পাঠানো হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতারাও ই-রিটার্ন সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন করে সহজেই অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন।এছাড়া করদাতার পক্ষে তাদের ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধিরাও চলতি বছর অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন। কোনো ধরনের কাগজপত্র বা দলিলাদি আপ্লোড না করে করদাতারা তাদের আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের প্রকৃত তথ্য ই-রিটার্ন সিস্টেমে এন্ট্রি করে সহজে ঝামেলাহীনভাবে ঘরে বসেই ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং অথবা মোবাইল ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিসের (বিকাশ, নগদ ইত্যাদি) মাধ্যমে অনলাইনে আয়কর পরিশোধ করে ই-রিটার্ন দাখিল করে তাৎক্ষণিকভাবে নিজেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-রিটার্ন দাখিলের প্রাপ্তিস্বীকার পত্র এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে আয়কর সনদ প্রিন্ট নিতে পারছেন।দাখিলকৃত রিটার্নে কোনো ভুল হলে রিটার্ন দাখিলের ১৮০ দিনের মধ্যে ই-রিটার্ন সিস্টেম থেকেই সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করা যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার করদাতা ই-রিটার্ন সিস্টেমে ২০২৫-২৬ কর বছরের সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করেছেন।ই-রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়া সহজবোধ্য করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড করদাতারা এবং করদাতার ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি তথা আয়কর আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যন্টস, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যন্টস এবং চার্টার্ড সেক্রেটারিজদের ও ই-রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়ার ওপর প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যায় করদাতাদের সহায়তা প্রদানের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক স্থাপিত কল সেন্টারের ০৯৬৪৩ ৭১ ৭১ ৭১ নম্বরে ফোন করে করদাতারা ই-রিটার্ন সংক্রান্ত প্রশ্নের তাৎক্ষণিক টেলিফোনিক সমাধান পাচ্ছেন।এছাড়া www.etaxnbr.gov.bd এর eTax Service অপশন থেকে করদাতারা ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যা লিখিতভাবে জানালে তার সমাধান পাচ্ছেন। পাশাপাশি সারাদেশের সব কর অঞ্চলে স্থাপিত ই-রিটার্ন হেল্প-ডেস্ক থেকে অফিস চলাকালীন সময়ে ই-রিটার্ন দাখিল বিষয়ক সব সেবা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ব্যক্তি শ্রেনির সব করদাতাদের ই-রিটার্ন সিস্টেম ব্যবহার করে আগামী ৩১ জানুয়ারি ২০২৬ তারিখের মধ্যে ২০২৫-২০২৬ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য অনুরোধ করছে।