দত্তক নেয়া কিশোরীকে নির্যাতনের অভিযোগে বরিশালে গৃহকর্ত্রী আটক

বরিশাল নগরীর পুলিশ লাইন এলাকায় দত্তক নেয়া এক কিশোরীকে দীর্ঘদিন শারীরিক নির্যাতন ও যৌন হয়রানির অভিযোগে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ। একই ঘটনায় অভিযুক্ত ওই নারীর ভাই পালিয়ে গেছে। পুলিশ ভুক্তভোগী শিশুটিকে উদ্ধার করে নিরাপদ হেফাজতে রেখেছে।মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) আটক হওয়া নারীর নাম এ্যাডলিন বিশ্বাস (৩৫)। কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাকে আদালতে সোপর্দ করেছে। যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত তার ভাই জনি বিশ্বাস (৩০) পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়।মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বরিশাল নগরীর পুলিশ লাইন রোড এলাকার আমবাগান অঞ্চলের বাসিন্দা ড্যান অধিকারী ও এ্যাডলিন বিশ্বাস দম্পতি প্রায় ১০ বছর আগে পোর্ট রোড এলাকায় কর্মরত মরিয়ম আক্তারের এক বছরের কন্যাশিশুকে দত্তক নেন। দত্তকের পর শিশুটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় এনজেল অধিকারী মিম। অভিযোগ রয়েছে, শিশুটির জৈবিক মা একাধিকবার মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে দত্তক পরিবার তাকে বাধা দেয়।সম্প্রতি শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না এমন দাবি করে এ্যাডলিন বিশ্বাস থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে নিজের গৃহপরিচারিকার বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়। তদন্তের ধারাবাহিকতায় পুলিশ গত ২৮ ডিসেম্বর নগরীর ৯ নম্বর ওয়ার্ডে দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি বাসা থেকে কিশোরীটিকে উদ্ধার করে।পুলিশ জানায়, স্থানীয়রা শিশুটির আচরণে অসংলগ্নতা লক্ষ্য করে তাকে নিজেদের হেফাজতে রেখেছিলেন। উদ্ধার হওয়ার পর আদালতে ও পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে কিশোরী জানায়, দত্তক নেওয়া গৃহকর্ত্রী এ্যাডলিন বিশ্বাস তাকে নিয়মিত মারধর করতেন এবং বাড়িতে কাজের লোক থাকা সত্ত্বেও কঠোর ও অমানবিক কাজ করতে বাধ্য করতেন। কাজ ঠিকমতো না হলেই নির্যাতনের শিকার হতে হতো।আরও পড়ুন: ঘন কুয়াশা কাটতেই বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে ফের লঞ্চ চলাচল শুরুজবানবন্দিতে আরও উল্লেখ করা হয়, একই বাড়িতে বসবাসকারী এ্যাডলিন বিশ্বাসের ভাই জনি বিশ্বাস বিভিন্ন অজুহাতে তাকে নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও যৌন হয়রানি করতেন। এসব নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সে বাসা থেকে পালিয়ে যায় বলে জানায় ভুক্তভোগী কিশোরী।বরিশাল কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল মামুন উল ইসলাম জানান, প্রাথমিক তদন্তে নির্যাতনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। শিশুটির অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং পলাতক অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।